মিরাজুল কবীর টিটো: গত কয়েক দিন ধরে যশোরে শৈত্য প্রবাহ চলেছে। শৈত্য প্রবাহের কারনে শীত জেঁকে বসেছে। সেই সাথে বইছে মৃদু বাতাস। কুয়াশার কারণে দেরিতে সূর্যের দেখা মিলছে। শীতের কারণে মানুষজনের স্বাভাবিক জীবনে ছন্দপতন ঘটছে।
বুধবার সকালে সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যশোরে। এ জেলায় ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিলো।
যশোর মতিউর রহমান বিমানঘাঁটির আবহাওয়া অফিস এ তথ্য জানিয়েছে। তবে আরো তিন-চার দিন এ তাপমাত্রা অব্যাহত থাকবে। এর আগে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় শনিবার ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে শীতের কারনে বিপাকে পড়েছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। শীতে সাথে কুয়াশায় চারিদিক আচ্ছন্ন থাকায় সাধারণ মানুষের চলাচলে বেগ পেতে হচ্ছে। ক্ষেতে খামারে কাজ করা মানুষগুলো নিদারুন কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। যে সময়টা মানুষজন কর্মস্থলে বের হয় সেই সময় (সকালে) বেশি শীত অনুভুত হয়। কুয়াশার সাথে রয়েছে হাল্কা বাতাস। ফলে ঠান্ডায় কাজ করতে বেশি বেগ পেতে হচ্ছে। তবে দুপুরের দিকে সূর্য্যরে দেখা দেয়ায় শীত কিছুটা কমলেও বিকেলের পর থেকে ফের শীত বেশি অনুভুত হচ্ছে। ফলে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া মানুষজন বাইরে থাকছে না।
মোক্তার আলী নামে এক ইজিবাইক চালক জানান, খুব সকালে ইজিবাইক নিয়ে আয়ের জন্য বের হচ্ছি। কিন্তু শীতের কারণে মানুষ বাইরে কম বের হচ্ছে। এ কারণে আয় একটু কমে গেছে। যা আয় হচ্ছে মালিককে দিয়ে নিজের সংসার কোনমতে চালাতে হচ্ছে।
রেজাউল নামে এক অটোরিক্সা চালক বলেন একই কথা। তিনি বলেন সকাল ৭টার দিকে রিক্সা চালাতে বের হই। তাতে কোন লাভ হচ্ছে না। শীত ও কুয়াশার কারণে মানুষের উপস্থিতি কম থাকায় শহর থাকছে ফাঁকা। সকাল ১০টার পরে ভাড়া মিলছে। আবার রাত ৮টার পরে ঠাণ্ডা বেশি অনুভূত হওয়ায় শহরে মানুষে উপস্থিতি কমে যাচ্ছে। এতে ভাড়া তেমন একটা হচ্ছে না।
চাঁচড়া জেলেপাড়ার জগদীশ জানিয়েছেন, সারা বছর পানির মধ্যে কাজ করা তাদের পেশা। ভোর বেলায় তাদের পানিতে নামতে হয় মাছ শিকারের জন্য। কিন্তু শীতের কারণে এখন তারা পানিতে নামতে পারছেন না । অগত্য নামলেও প্রচণ্ড কষ্ট পেতে হচ্ছে।
শার্শার বাগআঁচড়ার জিউলিতলা মোড়ের মোখলেছুর রহমান জানিয়েছেন, তিনি ৩ বিঘা জমিতে কুলের আবাদ করেছেন। এখন কুল পাড়ার সময়। খুব সকালে অনেক কষ্ট করে বাগানে আসতে হয়। আবার বেশি শীত পড়লে ফলনও নষ্ট হয়ে যায়।
বেলতলার ফলের আড়ৎদার ইসাহাক আলী জানিয়েছেন, এখানে কুল পেয়ারার পাইকারী আড়ৎ রয়েছে। সকালে কৃষক তার পণ্য আনতে পারছে না ঠিক মতো। বাজার জমতে দুপুর হয়ে যাচ্ছে। শীত কিছুটা কমলে সময়মত বাজারে কেনা বেচা হবে।
তিনি আরো জানিয়েছেন, প্রতিবছর এসময়ে শীতের তীব্রতা থাকে। তবে এবার বেশি মনে হচ্ছে। শীতের তীব্রতা আরো বেশিদিন থাকলে আমাদের মতো মানুষজন আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।