নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক নির্বাচন আজ। এবারের নির্বাচনে ১৩ পদে ২৭ প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। সভাপতি পদে দুই প্রার্থীর মধ্যে নেই কোনো উত্তেজনা। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক পদে চার প্রার্থীর মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। ভোটাররা বলছেন তারা এবার প্রচারণায় বিশ্বাসী না, যোগ্য নেতৃত্বের হাতেই তুলে দেবেন সমিতির দায়িত্ব।
আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান সভাপতি আবু মোর্তজা ছোট। এছাড়া এ পদের আরেক প্রার্থী সাবেক সহসভাপতি খোন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন মুকুল। ভোটাররা বলছেন প্রচার প্রচারণায় ও সার্বিক বিষয়ে এগিয়ে রয়েছেন আবু মোর্তজা ছোট।
এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে চারজন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। তাদের একজন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রার্থী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ গফুর। তবে, সাধারণ সম্পাদক পদে ফোরামের অন্যতম নেতা ও সমিতির বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলী জুলু মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন। এমনকি প্রথমে ফোরাম থেকে তাকে মনোনয়নও দেয়া হয়েছিলো। পরবর্তীতে ফোরাম গফুরকে মনোনয়ন দেয়। বাধ্য হয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন জুলু। এতে করে ফোরামের নেতৃবৃন্দের মধ্যে মনকষ্ট রয়েছে। সেক্ষেত্রে কিছু ভোট চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারপরও নির্বাচনের ফলাফলে গফুরই বিজীয় হবেন বলেন ভোটাররা মনে করছেন।
এদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদে লইয়ার্স কাউন্সিলের প্রার্থী হয়েছেন আ.ক.ম মনিরুল ইসলাম। তিনিও সমানে প্রচারণা চালিয়েছেন। তারও সম্ভাবনা রয়েছে অনেকাংশে। তবে ফোরামের মধ্যে যদি ভেদাভেদ তৈরী হয় তাহলে অতিরিক্ত সুবিধা পাবে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মনিরুল।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের একমাত্র সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন হাদিউজ্জামান সোহাগ। তরুণ এ প্রার্থী সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহানুর আলম শাহীনের অনুসারী। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের বৃহৎ একটি অংশ রয়েছে সোহাগের সাথে। সেক্ষেত্রে তারও সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করছেন ভোটাররা। এককথায় কে হচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক তার সমীকরণটা বেশ জটিল হয়ে পড়েছে।
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের গতবারের পরাজিত প্রার্থী খালেদ হাসান জিউস সমিতির এবারও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন। গত নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে জিউস হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে পরাজিত হয়েছিলেন। সেই নির্বাচনের অনেকখানি অগ্রসর হলেও পরবর্তীতে তিনি ভোটারদের সাথে সেই যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেননি। ফলে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ থেকে তিনি এবার মনোনয়ন পাননি। তারপরও তিনি বেশ ভোট পাবেন বলে ধারণা করছেন ভোটাররা।
আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের অন্য প্রার্থীরা হলেন, সহসভাপতি পদে গোলাম মোস্তফা ও আব্দুল লতিফ মোড়ল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নুর আলম পান্নু, সহকারী সম্পাদক পদে বোরহান উদ্দীন সিদ্দিকি, সেলিম রেজা, গ্রন্থগার সম্পাদক পদে ইলিয়াস সাদত (শাহাদৎ) ও সদস্য পদে মুন্সি মো. মনজুরুল মাহমুদ, মৌলুদা পারভীন, মাধবেন্দ্র অধিকারী, এনামুল আহসান টিটুল, তরিকুল ইসলাম।
ল’ইয়াস কাউন্সিলের অপর প্রার্থীরা হলেন, সহসভাপতি পদে আলমগীর সিদ্দিক ও মনজুর কাদির আশিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ওয়াজিউর রহমান, গ্রন্থগার সম্পাদক পদে এসএম শাহারিয়ার হক ও সদস্য পদে শফিকুল ইসলাম, রওশনারা খাতুন রুমা, রফিকুল ইসলাম।
এছাড়া গণতান্ত্রিক আইনজীবী ফোরাম সমার্থিত একমাত্র প্রার্থী সহকারী সম্পাদক পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন আশরাফুল আলম ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গ্রন্থগার সম্পাদক পদে রুহুল কুদ্দুস তপু ও সদস্য প্রার্থী দৌলতুন নেছা প্রার্থী হয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনার ইসমত হাসার জানিয়েছেন, নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি শেষ। আটটি বুথে ৫শ’৩৭ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। শনিবার সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত সমিতির ১ নম্বর ভবন মিলনায়তনে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।