নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে স্ত্রী মায়া রাণীকে হত্যার ঘটনায় এনজিও কর্মী পরিতোষ কুমার সানাকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হেলাল সরদার। পরিতোষ সাতক্ষীরা আশাশুনির বলাবাড়িয়া গ্রামের গোবিন্দ সানার ছেলে। তিনি ঘটনার সময় স্ত্রী সন্তান নিয়ে যশোর উপশহর ডি/১৭ নম্বর বাড়ির তৃতীয়তলার ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ৯ বছর আগে মায়া রানীকে বিয়ে করেন পরিতোষ কুমার। দাম্পত্য জীবনে তাদের ৭ বছরের একটি মেয়ে আছে। পরিতোষ এনজিওতে চাকরির সুবাদে যশোর বদলী হয়ে উপশহর এলাকার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকতেন। বেশ কিছুদিন ধরে সুশান্ত দেরি করে বাড়িতে ফেরে এবং মোবাইলে অনেকক্ষণ ধরে কথা বলে। এনিয়ে মায়া রানীর সন্দেহ হয়। পরিতোষ পরকীয় আসক্ত হয়ে পড়ার প্রতিবাদ করলে নানাভাবে নির্যাতন করতো। পারিবারিকভাবে পরিতোষকে বিষয়টি জানানো হলে পরকীয়ার বিষয়টি স্বীকার করে।
চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি সকালে মায়া রানীর সাথে তার স্বামীর বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে পরিতোষ তার স্ত্রী মায়া রানীকে ধাক্কা দিয়ে বাথরুমের মধ্যে ফেলে দেয়। মায়া রানী পানির কলের উপর পড়ে গুরুতর জখম হয়। পরিতোষ এরপর মায়া রানীর চুল ধরে বাথরুমের দেয়ালে আঘাত করে এবং গলায় ফাঁস লাগিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে তার অফিসের ম্যানেজারের কাছে ফোন দেয় এবং বলে বাথরুমে পড়ে মারা গেছে। সকালে পরিতোষ মায়া রানীর মরদেহ আশাশুনির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকার লোকজনের সন্দেহ হলে বাধা দেয়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এরমধ্যে পরিতোষ তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সুশান্ত মন্ডল বাদী হয়ে পরিতোষকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে আটক আসামির দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় পরিতোষকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। চার্জশিটে অভিযুক্ত পরিতোষ কুমার সানাকে আটক দেখানো হয়েছে।