নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের দাম দুই থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চালের পাশাপাশি বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও ফার্মের ডিমের দাম। তবে বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম কিছুটা কমেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দুই সপ্তাহ আগে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি মোটা চালের (স্বর্ণা/২৮) দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৪ টাকা। শুক্রবার এসব চাল ৫২ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এভাবে চিকন চালের (মিনিকেট) দামও কেজিতে দুই থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চালের বিভিন্ন মোকাম ও পাইকারি পর্যায়ে কেজিপ্রতি দর বেড়েছে দুই থেকে তিন টাকা।
শহরের বড় বাজারের মুদি দোকানী আশিষ সাহা জানান, গত কয়েকদিনে ব্যবধানে বাজারে সব ধরণের চালের দাম কেজিতে ২-৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কি কারণে বাড়ছে তা বলতে পারব না।
বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি উভয় প্রকার মুরগির দাম বেড়েছে। দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, যা গতকাল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে কোথাও এই দাম আরও ১০ টাকা বেশি ছিল। আর সপ্তাহের ব্যবধানে সোনালি মুরগির দামও কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা হয়েছে।
১০ দিনের ব্যবধানে বাজারে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দাম ডজন প্রতি পাঁচ টাকা বেড়েছে। গতকাল প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা দরে। আর ফার্মের মুরগির সাদা ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা দরে।
বাজারে বেশ কয়েক মাস ধরে চড়া রয়েছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, গত বছরের এই সময়ের তুলনায় প্রতি কেজি আলু ২৯ শতাংশ ও দেশি পেঁয়াজ ৩৫ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে আলু ও পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আলু আমদানিতে বিদ্যমান ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া আলু আমদানিতে থাকা ৩ শতাংশ এবং পেঁয়াজ আমদানিতে থাকা ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের সপ্তাহের তুলনায় বেশ কিছু সবজির দাম কেজি প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা করে কমেছে। যেমন গতকাল প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৯০ টাকা দরে, যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ১১০ টাকা। বরবটিও কেজিতে ২০ টাকা কমে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
অন্যান্য সবজির মধ্যে করলা, কাঁকরোল, টমেটো, পেঁপের দাম কমেছে; বাকিগুলোর দাম আগের মতো অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্যদিকে কাঁচা মরিচ কেজিতে ২০ টাকা দাম কমে গতকাল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
এ ছাড়া রুই, তেলাপিয়া, পাঙাশের মতো মাছ আগের দামেই বিক্রি হয়েছে। গতকাল প্রতি কেজি (চাষের) রুই ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও পাঙাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে ইলিশের দাম (এক কেজি আকারের) কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কমে গতকাল ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
শহরের বেজপাড়ার রফিকুল হাসান বলেন, বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমলেও অন্যান্য পণ্যের দাম বেশ চড়া। এসব প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম না কমালে আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষদের স্বস্তি নেই।