বিল্লাল হোসেন: যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে চুরি করে নিয়ে যাওয়া ৪টি বস্তা উদ্ধার হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে স্বেচ্ছাসেবী হৃদয়ের বাড়ি থেকে বস্তাগুলো উদ্ধার করা হয়। বস্তায় সরকারি-বেসরকারি কোনো মালামাল পাওয়া যায়নি। কিছু পুরাতন কাগজপত্র ভরা ছিলো। অভিযোগ উঠেছে, চুরির ঘটনা আড়াল করতে মালামাল গায়েব করা হয়েছে। ঘটনাটি ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য বস্তাগুলোতে ওষুধের কার্টন ও পুরাতন কাগজপত্র ভরে রাখা হয়। এদিকে, চুরির ঘটনা ফাঁস হওয়ায় খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মুনজুর মুরশিদ মঙ্গলবার হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অর্থোপেডিক বিভাগের ডা. আব্দুর রশিদকে সভাপতি করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্য সচিব হলেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. পার্থ প্রতীম চক্রবর্ত্তী। বাকি ৩ সদস্য হলেন ডা. আনোয়ার হোসেন, ডা. ফজলুল হক খালিদ ও ডা. বিচিত্র মল্লিক। কমিটির সকলকে চিঠি দেয়া হয়েছে। হাপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ১৪ জুলাই ভোরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের স্টোর রুম থেকে মালামাল ভর্তি ৪টি বস্তা চুরি করে নিয়ে যায় হৃদয়সহ দুই ২জন স্বেচ্ছাসেবী। সেখানকার সাব ইনচার্জ মিলন ঢালীর কথামতো বস্তাগুলো চুরি করে নিয়ে যান তারা। ওই বস্তায় মূল্যবান ওষুধ, প্লাস্টার, সুতাসহ অন্যান্য মালামাল ছিলো। মালামাল নিয়ে যাওয়ার সময় হাসপাতালের বাইরে তারা ধরাও পড়েন। খবর পেয়ে মিলন ঢালী মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মালামাল ও দুই স্বেচ্ছাসেবীকে রক্ষা করেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হলেও তা ফাঁস হয়ে যায়। এদিকে, মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার দিকে চুরি হওয়া ৪ টি বস্তা স্বেচ্ছাসেবী হৃদয়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে। হৃদয়ের বাড়ি সদর উপজেলার ইছালী গ্রামে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বস্তাগুলো খোলার পর তাতে বিভিন্ন ওষুধ সামগ্রীর কার্টন ও পুরাতন কাগজপত্র পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কর্মচারী জানান, চুরির ঘটনা আড়াল করতে মালামাল গায়েব করে বস্তায় কাগজের কার্টন ভরে রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালে রীতিমতো তোলপাড় চলছে। এই বিষয়ে জরুরি বিভাগের সাব ইনচার্জ মিলন ঢালী জানান, বস্তায় কোন ওষুধ সামগ্রী ছিলো না। পুরাতন কাগজপত্র নিয়ে যাচ্ছিলো স্বেচ্ছাসেবীরা। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেছেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে সত্যতা ঘটনা বেরিয়ে আসবে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, চুরির ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর খুলনা বিভাগীয় পরিচালক মুনজুর মুরশিদ মঙ্গলবার হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে মালামাল চুরির ঘটনার সত্যতা মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও জানান, চুরি হওয়া ৪ টি বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে কাগজের কার্টন পাওয়া গেছে। মালামাল গায়েব করে কার্টনে ভরে রাখা হয়েছে কিনা সেটাও তদন্ত করা হচ্ছে।