নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘদিন পর দালাল মুক্ত হয়েছে বেনাপোল আন্তর্জাতিক কাস্টমস ও পুলিশ ইমিগ্রেশন। চলতি মাসের শুরু থেকে বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে দালালদের দৌরাত্ম বন্ধ হয়ে গেছে। ভারত গমনকারী পাসপোর্ট যাত্রী হয়রানি বন্ধে সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ফলে পাসপোর্ট ছাড়া কোনো ব্যক্তি কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন টার্মিনালে প্রবেশ করতে পারছে না। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার আব্দুল হাকিমের নির্দেশে ডেপুটি কমিশনার আথেলো চৌধুরী গত বৃহস্পতিবার এক আদেশ জারি করেন। কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনকে দালাল মুক্ত করতে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক স্ক্যানিং মেশিন ও সিসি ক্যামেরা। এ ছাড়া সশস্ত্র আনসার ও আমর্ড পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সাথে কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে বাহিরাগতদের। যাত্রী টার্মিনালের প্রধান ফটকে বন্দরের নিরাপত্তা কর্মী, আনসার সদস্য, আমর্ড ব্যাটালিয়ন ও কাস্টমস অফিসাররা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখায় প্রবেশ করতে পারছে না বহিরাগতরা। এতে পাসপোর্ট যাত্রীর সংখ্যাও বেড়েছে। ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাদের সেবার মান বৃদ্ধি করায় যাত্রীরা দ্রুত ও সুশৃঙ্খলভাবে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারছেন নিজেরাই। বেনাপোল কাস্টমস সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল চেকপোস্টে এক শ্রেণির লোক দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। সিরিয়াল ছাড়া পাসপোর্টের কাজ দ্রুত করে দেয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল চক্রটি। পাসপোর্ট যাত্রীদের পক্ষ থেকে কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার সাফায়েত হোসেন কাস্টমস-ইমিগ্রেশনকে দালাল মুক্ত করার ঘোষণা দেন। যাত্রীদের সেবার মান উন্নত করতে চেকপোস্ট প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে বহিরাগত দালাল উৎখাতে এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে টার্মিনাল এলাকায় বহিরাগত কোনো দালাল ঢুকতে না পারে সেজন্য প্রতিনিয়ত তদারকি করা হচ্ছে। বেনাপোল চেকপোস্ট পুলিশ ইমিগ্রেশনের ওসি আযহারুল ইসলাম জানান, বর্তমানে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে ৮ থেকে ১০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছে। যাত্রীদের সেবার মান বাড়াতে ইমিগ্রেশনের ডেস্কের সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। যাত্রীরা নিজেরা সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে তাদের পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে নিচ্ছে। তিনি জানান, কাস্টমস চেকপোস্টের রাজস্ব কর্মকর্তা জাহাংগীর আলম ও মোখলেছুর রহমান এবং সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সরকার ইমরান ওয়াহিদহ, কাজী নাঈম উদ্দিন, সুমনা হক এ্যানি, ও কামরুন নাহার গত ৬ মাসে ৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্যসহ ৮০ লাখ ডলার ও ৪ কেজি সোনাসহ ৪ জনকে আটক করেছেন। বর্তমানে বেনাপোল কাস্টমস ডেপুটি কমিশনার অথেলো চৌধুরী জানান, বর্তমানে চেকপোস্ট কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনকে দালালমুক্ত করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। এটি করতে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে আমাদের। বর্তমানে কোনো প্রকার হয়রানি ছাড়া নিরাপদে যাত্রীরা ভারত গমনাগমন করছেন। সব ধরনের ল্যাগেজ পার্টির তৎপরতা বন্ধ করা হয়েছে। কোনো ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনে বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না।