বনরক্ষীদের বিরুদ্ধে জেলেদের মারধর করে কাঁকড়া ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ

এখন সময়: রবিবার, ২৮ এপ্রিল , ২০২৪, ০৫:৩৭:৫০ পিএম

মোংলা প্রতিনিধি : সুন্দরবনে জেলেদের আহরিত ২০ লাখ টাকা মূল্যের কাঁকড়া ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বনরক্ষীদের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে নদীতে জেলেদের নৌকায় হামলা ভাঙচুর ও মারধরসহ ছয় জেলেকে আটক করে তারা। এ ঘটনায় দুই জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলে দাবি করেছেন ফিরে আসা জেলেরা। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) ভোর রাতে চাঁদপাই রেঞ্জে নন্দবাল এলাকায় এ ঘটনায় বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে মোংলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে জেলেরা এ তথ্য জানান। 

লিখিত বক্তব্যে জেলে তরিকুল, ওমর গাজী, আলমঙ্গীর ও রাজিব শেখ বলেন, বনবিভাগের পাস-পারমিট সংগ্রহ করে  গত ১২ নভেম্বর ৪০ জেলে ১২টি নৌকা নিয়ে সুন্দরবনের দুবলা এলাকায় কাঁকড়া আহরণ করতে যায়। পরে গত ২১ নভেম্বর রাতে চারটি নৌকায় ৪০ মন কাঁকড়া নিয়ে লোকালয়ে ফিরে আসছিলেন তারা। এ সময় পশুর নদীর নন্দবালা এলাকায় পৗছালে চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে ১০/১২ জন বনরক্ষী ও বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে জেলেদের নৌকা আটক করে। 

তখন জেলেরা তাদের বৈধ অনুমতিপত্র দেখালেও বনরক্ষীরা জেলেদের কাছে অনৈতিক ভাবে অর্থ দাবি ও বাকবিতাণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায় জেলেদের মারধর, নৌকা ভাঙচুর করে এবং ইউনুছ আলী(৫৫), আজিজুল(২২), রাজ্জাক(৩০), জাহিদুল(২৩), মিজান(৩০) ও তোফাজ্জোল(৩৫) নামের  ছয় জেলেকে আটকসহ নৌকা, আহরিত কাঁকড়া ছিনিয়ে নেয়। এ ছাড়া হামলা ও মারধরের সময় রুমি শেখ(১৮) ও আলমগীর (৩২) নামে অপর দু’ জেলে নিখোঁজ হয়। 

ফিরে আসা জেলেরা বলেন, সুন্দরবন ও সাগর উপক‚লে কাঁকড়া আহরণ করতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়লে লোকালয় থেকে নৌকা ট্রলার পাঠিয়ে উদ্ধার করা হয়। সেই ট্রলারটিও ভাঙচুর করে নিয়ে গেছে বনরক্ষীরা। জেলেরা  বলেন, তাদের কাছ থেকে নিয়ে নেয়া আহরিত ৪০ মন কাঁকড়ার (রপ্তানিযোগ্য) বাজার মূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জেলেরা অভিযোগ করেন, তাদের কাছ থেকে ঘুষ ও অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিতে বনরক্ষীরাদের হাতে নির্যাতন ও হয়রানী নিত্যনৈমিক্তিক ঘটনা। 

সুন্দরবনে জেলেদের কাঁকড়া আহরণে পাসপারমিট থাকার কথা স্বীকার করে চাঁদাপাই স্টেশন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, কাঁকড়া আহরণে বৈধতা থাকলেও অবৈধ পরিবহন ব্যবস্থার কারণে কাঁকড়া ও চারটি নৌকা, একটি নৌকা ট্রলারসহ ছয় জেলেকে আটক করা হয়েছে। তবে জেলেদের মারধর ঘটনা অস্বীকার করেন তিনি । এ ছাড়া দু’জেলে নিখোঁজ থাকার বিষয়টি অবগত নয় বলেও জানান তিনি। 

এ প্রসঙ্গে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক রানা দেব বলেন,জেলেরা পাস দুবলায় জমা না দেয়াসহ কাঁকড়া পরিবহনে অবৈধভাবে ইঞ্জিন চালিত নৌকা ট্রলার নৌকা ও কাঁকড়া আটক করা হয়েছে। তার অভিযোগ-জেলেরা বনবিভাগের অফিস ও জলযানে ইটপাটকেল ছুঁড়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। এ বিষয় বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

উদ্ভুত পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সুন্দরবন খুলনাঞ্চলের বনসংরক্ষক  মিহির কুমার দো বলেন, এ ঘটনা খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। বনরক্ষী/জেলেরা দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।