Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

শুধু নামেই যশোর করোনারি কেয়ার ইউনিট

এখন সময়: শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর , ২০২৫, ০২:১৭:৫১ এম

বিল্লাল হোসেন: যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ডাক্তারের দায়িত্বে অবহেলায় হৃদরোগের উন্নত চিকিৎসা নেই। দুপুরের পর পরের দিন সকাল পর্যন্ত কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দেখা মেলেনা। ইন্টার্ন ও মেডিকেল অফিসার দিয়ে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। ফলে যথাযথ চিকিৎসার অভাবে প্রায় ঝরে যাচ্ছে মহা মূল্যবান প্রাণ। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা হৃদরোগ বিভাগ থেকে রোগীরা কাক্সিক্ষত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না।

জানা গেছে, ২০০৫ সালে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোর ২৫০ শয্যা  জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে করোনারি কেয়ার ইউনিটের তিনতলা ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। ২০০৬ সালের ১২ অক্টোবর উদ্বোধন হয় যশোর করোনারি কেয়ার ইউনিট। কিন্তু জনবলের অভাবে বন্ধ ছিলো চিকিৎসা কার্যক্রম। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২৪ জন চিকিৎসক ৫৬ জন নার্স ও ১৪৩ জন কর্মচারী নিয়োগের চাহিদাপত্র পাঠায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ে। কিন্তু কয়েক দফায় ইউনিটটি চালুর সময় পিছিয়ে যায়। শেষমেষ নানা সংকটের মধ্যে ২০০৯ সালের ১২ জুলাই যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জনবল দিয়েই শুরু হয় চিকিৎসা কার্যক্রম।সেই থেকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে বিভাগটি।

বর্তমানে সিসিইউতে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের কার্ডিওলজি কনসালটেন্ট ও মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক চিকিৎসকরা রোগী দেখেন। কিন্তু তারা সঠিকভাবে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন না। নিজেদের ইচ্ছামত ওয়ার্ড রাউন্ডে যান ও বর্হিবিভাগে রোগী দেখেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।  

সরেজমিনে দেখা গেছে, করোনারি কেয়ার ইউনিটে মোট ২৮ টি শয্যা রয়েছে। এছাড়া বহির্বিভাগে প্রতিদিন শতাধিক রোগী চিকিৎসার জন্য আসেন। তাদের বেশির ভাগই দরিদ্র মানুষ। হৃদরোগে আক্রান্তরা সঠিকভাবে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না। অন্তবিভাগ ও বহির্বিভাগের রোগীরা সব পরীক্ষা হাসপাতালের বাইরের ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক থেকে করিয়ে আনতে হয়। এতে করে রোগীদের হয়রানী ও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আবার পরীক্ষায় নিরীক্ষায় গুনতে হচ্ছে বাড়তি পরিমান অর্থ।

একাধিক রোগী ও স্বজনরা জানান, সকালে চিকিৎসকরা রাউন্ডে আসেন। কিন্তু বিকেলের পর থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসকের দেখা মেলে না। আর জরুরি বিভাগে সহকারী রেজিস্ট্রারের পরিবর্তে দায়িত্ব পালন করেন ইন্টার্ন অথবা মেডিকেল অফিসার। জোড়াতালি দিয়েই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে। চিকিৎসাধীন রোগীদের কিছু ওষুধ বিতরণ ও  প্রেসার মেপে দায়িত্ব শেষ করেন সেবিকারা। কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয় না করোনারি কেয়ার ইউনিটে। 

রোগী ও স্বজনদের ভাষ্যমতে, করোনারি কেয়ার ইউনিট নামে তালপুকুর বাস্তবে ঘটি ডোবে না। প্রয়োজনের সময় চিকিৎসক ডেকেও পাওয়া যায় না। সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাইরে থেকে করতে হচ্ছে। অধিকাংশ ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। রোগী অবস্থা একটু খারাপ হলেই অন্যত্র স্থানান্তর করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটি চলছে হ-য-ব-র-ল অবস্থার মধ্য দিয়ে। রোগীর স্বজনরা আরো জানান, যশোর অঞ্চলে হৃদরোগে আক্রান্ত প্রত্যেক রোগীকে যশোর করোনারি কেয়ার ইউনিটে আনা হয়  উন্নত চিকিৎসার জন্য। তাদের প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে রোগীর সংকটাপন্ন মুহূর্তে অক্সিজেন, ভেনটিলেশন ও কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস পরিচালনসহ উন্নত সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি তাদের।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, নানা সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে করোনারি কেয়ার ইউনিটের কার্যক্রম। এরপরও রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের দায়িত্ব পালনে অবহেলার বিষয়টি খোঁজ নেয়া হবে।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)