বাবুল আক্তার, চৌগাছা : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল যশোরের চৌগাছায় পুলিশের গুলিতে পা হারানো দুই শিবির নেতার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার তদন্ত করেছেন।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই প্রতিনিধিদল তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এ সময় গুলিতে পা হারানো দুই শিবির নেতা নারায়ণপুর গ্রামের রুহুল আমিন এবং চুটারহুদা গ্রামের ইসরাফিলের বাড়িতে যান। তাদের বাড়িতে গিয়ে দুই শিবির নেতার পিতা ও মাতাদের সাক্ষাৎকার নেন প্রতিনিধি দল।
সাক্ষাৎকারে সেদিনের লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন রুহুল আমিনের মা নাজমা বেগম এবং ইসরাফিলের পিতা আব্দুর রহমান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সরেজমিনে এ তদন্ত করেন।
এ ঘটনায় ২৮ আগষ্ট একটি প্রতিনিধি দল ঘটনার তদন্ত করেন। গতকাল ঘটনাস্থলে ২য় বারের মতো এলাকার সাধারণ মানুষ ট্রাইব্যুনালের তদন্তকারি প্রতিনিধি দলের সামনে সাক্ষি দেন।
এ সময় সাক্ষিদাতারা ও ভুক্তভোগির স্বজনরা বলেন, পতিত সরকারের শাসন আমলে ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট তৎকালিন চৌগাছা থানার ওসি মশিউর রহমান, সেকেন্ড অফিসার এস আই আকিক, এস আই মখলেস, এস আই আহসান, এএস আই মাজেদ হোসেন, এসআই জামাল ও তাদের সঙ্গীরা তাদেরকে মহেশপুর-চৌগাছা সড়কের টেঙ্গুরপুর মোড় থেকে কোন কারণ ছাড়াই আটক করেন। পরে রাতে তাদেরকে উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের বুন্দলীতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে নিয়ে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে দু’জনের পায়ে গুলি করে পুলিশ। সেখান থেকে তাদেরকে চৌগাছা সরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে জরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক তাদের যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখান থেকে ঢাকা পঙ্গুতে পাঠান। ইসরাফিল হোসেনের ১টি ও রুহুল আমিনের ১টি পা কেটে বাদ দেয়া হয়। তারপর আমাদেরকে জেলে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকার পতনের পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করে দুই শিবির নেতা। অভিযোগের তদন্ত করতেই ২য় বারের মতো ট্রাইব্যুনালের প্রতিনিধিদল তদন্তে করেছেন।
ট্রাইবুন্যালের উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমরা এর আগেও একবার ঘটনাস্থলে পৌছে স্থানীয়দের স্বাক্ষ গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, এ ঘটনায় এস.আই. আকিকসহ তিনজন পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত ছিলনা তাদের কেউ জড়িয়ে না যায় সে কারণে স্বচ্ছতার জন্য ২য় বারের মতো স্বাক্ষ গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত রির্পোট সংশ্লিষ্ট শাখায় পৌঁছে দেয়া হবে।