মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরায় ষাটোর্ধ্ব সাহেলা বেগম। জুলাই-আগস্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শহিদ মেহেদী হাসান রাব্বী হত্যার বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তার মা সাহেলা বেগম। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে একটি বছর পার হয়ে গেলে ছেলে হত্যার বিচার না পাওয়া হতাশ গোটা পরিবার।
বুধবার মা সালেহা বলেন, এক বছর আগে আমার ছেলে রাব্বি মারা গেছে। এহনো কোন বিচার আচার আমি পাইনি। ছেলে হত্যার বিচারের দাবি করেন এই বৃদ্ধা মা। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনে নিহত রাব্বীকে বীরশ্রেষ্ঠ পদমর্যাদায় সম্মান প্রদানে আবেদন করা হয়েছে।
নিহত রাব্বী জেলা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মাগুরা পৌরসভার বরুনাতৈল গ্রামের মৃত ময়েদ উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয় কথা বলে জানা গেছে, গেল বছর ৪ আগস্ট সকাল ১০ টার দিকে মাগুরা-ঢাকা মহাসকের পারনান্দুয়ালী নবগঙ্গা নদী ব্রিজের ওপর অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতা কর্মীরা। এছাড়া ব্রিজের পশ্চিম পাশে অবস্থান নেন পুলিশ সদস্যরা। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও সেখানে অবস্থান নিয়ে এ আন্দোলনে যোগ দেন।
আন্দোলনে উভয় পক্ষ ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষ শুরু হয়। দিনব্যাপী চলে এ সংঘর্ষের ঘটনা। দুপুরে প্রতিপক্ষের গুলিতে আহত হন জেলা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহদী আহান রাব্বী। পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্ত ছাড়াই রাতে মেহেদী হাসান রাব্বীকে দাফন করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় জেলা ছাত্রদল যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহদী হাসান রাব্বি নিহত হওয়ার ঘটনায় ১৩ জনের নামে ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট রাতে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই ইউনিস আলী। তবে এ মামলায় আজ্ঞাত পরিচয় আসামি করা হয়েছে ১৫০ জনকে।
তবে ওই মামলায় আসামি হিসেবে যাদের কে দেখানো হয়েছে সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গেছে।
মামলার বাদী নিহতের বড় ভাই বলেন, মেহেদী হাসান রাব্বী শহিদ হওয়ার পর মামলা করার পর পুলিশ এখনো পর্যন্ত এই মামলার চাজর্শিট প্রতিবেদন ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার কোনটা তারা করতে পারেনি। একটি বছর শেষ হয়েছে আমরা খুবই মমাহত।
মাগুরা পুলিশ সুপার মিনা মাহামুদা বলেন, জুলাই-আগস্টের নিহতদের মামলায় একাধিক মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। দেখা যায় কোন কোন মামলায় ২শ থেকে তিন’শ জনকে আসামি করা হয়েছে। সেখানে তদন্ত করে অপরাধীদের বের করতে সময় লাগছে। অভিযুক্ত আসামি গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে। পুলিশি তদন্ত চলমান রয়েছে।