নিজস্ব প্রতিবেদক: যৌতুকের দাবিতে মারপিট করায় নুরু কাজী নামে এক ব্যক্তিকে ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছে যশোরের একটি আদালত। মঙ্গলবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক ডক্টর আতোয়ার রহমান এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত নুরু কাজী গোপালগঞ্জ কাশিয়ানীর শিবগাতী গ্রামের চাঁদ কাজীর ছেলে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০০০ সালের ৪ জানুয়ারি নুরু কাজী পারিবারিকভাবে শিবগাতী গ্রামের আমিনুর রহমানের মেয়ে জবেদা বেগমকে বিয়ে করে যশোরের বাঘারপাড়ার ধর্মগাতী গ্রামের বসবাস করতেন। বিয়ের পর গহনা, আসবাবপত্রসহ সংসারের যাবতীয় মালামাল দেয়। কিছুদিন যেতে না যেতে আসামি ব্যবসার কথা বলে স্ত্রীর কাছে ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। বিষয়টি জবেদা বেগমের পরিবার জানতে পেরে নুরু কাজীকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক হিসেবে দেন। এক বছর যেতে না যেতে আসামি তার স্ত্রীর নামের দুই শতক জমি তার নামে দলিল করে দিতে বলে। জমি দলিল করে দিতে অস্বীকার করায় জবেদাকে মারপিট করে জখম করে তার স্বামী। এ ঘটনায় জবেদা বেগম তার স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। বিষয়টি মীমাংসা হওয়ায় জবেদা বেগম তার মামলা প্রত্যাহার করে নেন। ২০২৩ সালে নুরু কাজী বিদেশে যাওয়ার কথা বলে তার স্ত্রীর কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। যৌতুকের টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায় নুরু কাজী ২০২৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর স্ত্রীকে মারপিট করে পিতার বাড়ি তাড়িয়ে দেন। ১৭ ডিসেম্বর নুরু কাজী ও তার পরিবারের লোকজন জবেদা খাতুনের পিতার বাড়ি এসে যৌতুক বাবদ দুই শতক জমি লিখে না দিলে সংসার করবেনা করে জানিয়ে দেন। এ নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে নুরু কাজী তার স্ত্রীকে মারপিট করে জখম করেন। গুরুতর আহত জবেদা বেগমকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ না করায় তিনি ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি আদালতে মামলা করেন। আদালতের আদেশে পিবিআই’র পরিদর্শক আজিজুল হক মামলার তদন্ত শেষে নুরু কাজীকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি নুরু কাজীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত নুরুকাজী কারাগারে আটক আছে।