নিজস্ব প্রতিবেদক: বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ভোরে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন বাবা মাসুদুর রহমান মাসুদ (৫০)। এদিন সকাল ১০টায় ছেলে আশিকুর রহমান আশিকের দাখিল পরীক্ষা। তাই বাবার লাশ বাড়িতে রেখে কাদতে কাদতে কেন্দ্রে যায়। বাবা হারানোর কষ্ট বুকে চেপে রেখেই চুড়ামনকাটির ছাতিয়ানতলা কেআই আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে আল কোরআন বিষয়ে পরীক্ষা শেষ করে আশিক। মৃত মাসুদ যশোর সদর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের দৌলতদিহি গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আশিক কাশিমপুরের মিরাপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার ছাত্র। বৃহস্পতিবার ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে মারা যান তার বাবা চুড়ামনকাটি বাজারের লিবার্টি সু’র ব্যবসায়ী মাসুদ। এ ঘটনায় পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। বেলা উঠতে না উঠতে বাড়িতে আত্মীয় স্বজন ভরে যায়। বাবার লাশের পাশে বসে কান্নাকাটি করছিলো ছেলে আশিক। তার আহাজারিতে অনেকে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। শোকাবহ পরিস্থিতির মধ্যে বাড়িতে বাবার লাশ রেখে সকালে পরীক্ষা দিতে যায় আশিক। দুপুর ১ টায় পরীক্ষা শেষে ছেলে বাড়িতে ফিরে জানাযার নামাজে অংশ নেয়। জানাযার নামাজ শেষে মাসুদের লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আশিকের প্রাইভেট শিক্ষক রাব্বি হাসান জিহাদ জানান, আশিক একজন মেধাবী ছাত্র। তার বাবার মৃত্যুর খবরে তিনি সকালে তাদের বাড়িতে যান। বাবার মৃত্যুতে আশিক মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তাকে সান্ত্বনা দিয়ে সাথে করে কেন্দ্রে পৌঁছে দেন।
আশিক জানায়, তাকে নিয়ে পিতার অনেক আশা ও স্বপ্ন ছিলো। হঠাৎ করে তাকে হতাশার সাগরে ভাসিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। পিতাকে হারানোর কষ্ট বুকে চাপা দিয়ে বাড়িতে লাশ রেখে পরীক্ষা দিতে আসা।
ছাতিয়ানতলা কে আই আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রের সচিব মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, বাড়িতে বাবার লাশ রেখে পরীক্ষা দেয়াটা অবশ্যই কষ্টকর। বুকে কষ্ট চেপে রেখে আশিক পরীক্ষা শেষ করেছে। তার মনটা খারাপ হলেও ভালোভাবে পরীক্ষা দিয়েছে। শিক্ষকরা তার দিকে আলাদাভাবে খেয়াল রেখেছিলেন।