নিজস্ব প্রতিবেদক: বেনাপোল সড়ক ছয় লেনে উন্নীত করতে না পারলে বাণিজ্যে গতি ফিরে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন যশোর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইণ্ডাস্ট্রির সভাপতি মিজানুর রহমান খান। মঙ্গলবার যশোর চেম্বার নেতৃবৃন্দ বেনাপোল বন্দরের কর্মকর্তাদের সাথে সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। বন্দরের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বেনাপোল বন্দরের পরিচালক মামুন কবীর তরফদার।
সভায় যশোর চেম্বারের সভাপতি মিজানুর রহমান খান ছাড়াও বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সম্পাদক তানভিরুল ইসলাম সোহান, যুগ্ম সম্পাদক এজাজ উদ্দিন টিপু, নির্বাহী সদস্য নুরুজ্জামান লিটন, আবদুল হামিদ চাকলাদার, সাইফুল ইসলাম লিটন, বেনাপোল বন্দরের সহকারী পরিচালক শামসুল আলম, ফাতেমা ইয়াসমিন প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলেন, বেনাপোল বন্দর দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর। দেশের সিংহভাগ আমদানি হয়ে থাকে এই বন্দর দিয়ে। অথচ বন্দরটিতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও সরঞ্জামাদি নেই। যেকারণে আমদানি ও রফতানিকারকরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ফরকলিফট ও ক্রেন স্বল্পতার কারণে পণ্য ডেলিভারি নিতে সময় পেন হচ্ছে। এতে করে ব্যবসায়ীদের ডেমারেজ দিতে হয়। বন্দরটিতে কয়েকবার আগুন লেগে বহু ব্যবসায়ী পথে বসেছে। আমদানিকৃত পণ্য চুরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। কোন সুরক্ষা দিতে পারছেনা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, কাস্টম কর্তৃপক্ষ আইনের মারপ্যাচে আমদানিকারকদের হয়রানি করছে। জরিমানা করতে পারলে তারা কমিশন পেয়ে থাকে। এতে করে তারা নানা ফাক ফোকর খুঁজে বের করে। কখনও অবৈধ পণ্য আটক হলে তার জন্য ট্রাক মাসের পর মাস আটকে রাখে। এতে করে ওই ট্রাকের মালিক নাজেহাল হয়ে পড়েন। অথচ তারা মালামাল নামিয়ে রেখে ট্রাকটি ছেড়ে দিতে পারে।
যশোর চেম্বারের সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, যশোর বেনাপোল সড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করতে না পারলে এপথে বাণিজ্য গতি ফিরে আসবেনা। বেনাপোল কাস্টম ও বন্দর থেকে সরকার প্রতি বছর ৭ হাজার কোটি টাকা আয় করলেও এটিতে আন্তর্জাতিকভাবে গড়ে তুলতে ভূমিকা নিচ্ছেনা। অতি দ্রুত কন্টিনারে পণ্য ওঠা-নামার ব্যবস্থা নিতে হবে। বন্দরটিতে আরও গতিশিল করতে ব্যবসায়ী, কাস্টম ও বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তুলতে না পারলে বন্দরটি তার গৌরব হারাবে। এই বন্দরে আন্তজার্তিকমানের শেড নির্মাণ করতে হবে।
পরে চেম্বারের নেতৃবৃন্দ বেনাপোল কাস্টম কমিশনার মো: কামরুজ্জামানের সাথে দেখে করে তাদের বক্তব্য পেশ করেন। তবে আগামীতে বৃহৎ পরিসরে কাস্টমের সাথে সভা করবে চেম্বার নেতৃবৃন্দ বলে জানান সংগঠনটির সভাপতি মিজানুর রহমান খান।
এদিকে যশোর চেম্বার নেতৃবৃন্দ বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন নেতবৃন্দের সাথে সভা করেছেন। নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি শামসুর রহমান। এসময় সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা, সিনিয়র সহসভাপতি খায়রুজ্জামান মধু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় চেম্বার নেতবৃন্দ বলেন, যশোর অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে রয়েছে। জেলাটিতে তেমন কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। এজন্য অর্থনৈতিক উন্নতি করতে হলে সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সদস্য এগিয়ে আসতে হবে। আমদানিকৃত পণ্য দ্রুত ছাড় করাতে তাদের ভূমিকা রয়েছে। ব্যবসায়ীরা যাতে কোনো ধরণের হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য সিএন্ডএফ এজেন্টদের নিষ্ঠার সাথে কাজ করা প্রয়োজন।