বিল্লাল হোসেন: যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে গায়ের সাথে গা ঘেঁষে শুয়ে আছেন অনেক রোগী। রোগীর চাপে শীতের মধ্যেও অসুস্থ এসব মানুষের স্থান হয়েছে ওয়ার্ডের মেঝে ও বাইরের বারান্দায়। এসব রোগীর অধিকাংশই হলো বয়স্ক নারী-পুরুষ। রোগীর লোকজন জানিয়েছেন, ওয়ার্ডে বাস্তবে চিকিৎসাসেবার পরিবেশ নেই। এভাবে মাসের পর মাস নোংরা পরিবেশে রোগীদের রেখে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। বাধ্য হয়ে টয়লেটের সামনেও থাকছে রোগী ও স্বজনেরা। ভর্তির পর ওই পরিবেশে মানিয়ে নিতে না পেরে অনেক রোগী অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে রোগী ও স্বজনদের সাথে দুর্ভোগের শেষ নেই।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পূরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে জায়গা সংকটের কারনে রোগীদের মারাত্নক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাঁধ্য হয়ে তারা ঠাসাঠাসি ও গাদাগাদি করে বসবাস করছেন। এক রোগীর শরীরের সাথে মিশে আছে আরেক রোগীর শরীর। সেখানে শয্যার তুলনায় ১০ গুণ রোগী রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের সাথে স্বজনের সংখ্যা প্রায় তিন গুন। ফলে জায়গা সংকটের কারনে তারা ওয়ার্ডের বাইরের বারান্দায় থাকছেন। আবার টয়লেটের সামনেও রোগী রাখা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসার্ধীন কয়েকজন রোগির স্বজন মুকুল হোসেন, পারভিনা খাতুন, আব্দুল কাদের, জালাল উদ্দিনসহ আরো অনেকেই জানান, নোংরা পরিবেশের কারনে রোগীর সাথে তারাও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। একেতো নোংরা পরিবেশ তারপরেও জায়গা সংকটে গাদাগাদি করে বাধ্য হয়ে সেখানে থাকতে হচ্ছে। দেখে মনে হয় এটা হাসপাতালের ওয়ার্ড নাযেন রেলস্টেশনের রাতের প্লাটফর্মের চিত্র।
পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন আব্দুস সালাম ও হাশেম আলী জানান, ওয়ার্ডটি যেনো রেলস্টেশনের রাতের প্লাটফর্ম। যেখানে-সেখানে রোগী শুয়ে আছে। এক প্রকার তারা বাধ্য হয়ে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন। মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন আনিসুর রহমান জানান, সেদিকে চোখ পড়ছে সেদিকে রোগী। ওয়ার্ডের বাইরে ওভার ব্রিজের ওপর রোগীর ঠাঁই হয়েছে। নোংরা পরিবেশে থেকে অনেক রোগী চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন।
মেডিসিন ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সেবিকা ও কর্মচারীরা জানিয়েছেন, অন্যান্য ওয়ার্ডের তুলনায় পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে সব সময় রোগীর সংখ্যা বেশি থাকে। অথচ এই ওয়ার্ডেই জায়গা সংকট। নোংরা পরিবেশে রোগীদের সাথে তারাও কষ্ট করে দায়িত্ব পালন করছেন। রোগীর সংখ্যা বেশি থাকায় দায়িত্ব পালনে রীতিমতো হীমশিম খাচ্ছে।
এই বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.হারুন অর রশিদ জানান, জায়গার তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি। যে কারণে সেখানে রোগীর চাপ রয়েছে। নতুন ভবন নির্মানের পর রোগীদের জায়গা সংকট থাকবে না। সেখানে নোংরা পরিবেশ দূর করার বিষয়ে তিনি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।