কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: কোটচাঁদপুর পৌরসভার ৫৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীর ৩৫-৪০ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এ পৌরসভায় স্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছে ৩৭ জন। চুক্তিভিত্তিক হিসেবে আছেন ১৯ জন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পৌরসভার নির্বাচিত মেয়রদের পদ বিলুপ্তির পর ১৮ আগস্ট থেকে এ পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ঝিনাইদহ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আতিকুল মামুন। তিনি ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১ মাস ৮ দিন দায়িত্ব পালন করলেও তার সময়ের ১ মাসের বেতন দেয়া হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পৌরসভার এক কর্মকর্তা জানান, সে সময় বেতন দেয়ার মত যথেষ্ট ফান্ড ছিল। কিন্তু তিনি বেতন না দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেন। নির্বাহী অফিসার দায়িত্ব গ্রহণের পর আতিকুল মামুনের সময়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেননি। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে শুধুমাত্র তার সময়ের বেতন দেয়া শুরু করেন। এমনিতেই পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একেক জনের ৩৫-৪০ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এর উপর নতুন করে ১ মাসের বেতন বকেয়া রাখায় পৌর কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছেন। সদ্য পদচ্যুত মেয়র সহিদুজ্জামান সেলিমের আমলে ৮ মাস, জাহিদুল ইসলাম জিরে ও সালাহ উদ্দিন বুলবুল সিডলের আমল নিয়ে মোট ৩৫-৪০ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এদিকে ৩ মাস ধরে চুক্তিভিত্তিক ১৯ কর্মচারীকে বেতন দেয়া হচ্ছে না। কর্মচারীরা জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী ও প্রধান হিসাবরক্ষক কর্মকর্তাকে নিয়ে একটি যাচাই-বাছাই কমিটি করেন। ওই কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার সুপারিশ করেছেন। কিন্তু এরপরও চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের বেতন দেয়া বন্ধ রয়েছে। এতে করে এ সমস্ত কর্মচারীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের বেতন না দেওয়ার ব্যাপারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক রথিন্দ্রনাথ রায় বলেন, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তদের মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমোদন নেই। তাই তাদের বেতন পাওয়ার সুযোগও নেই। বেতন বঞ্চিত কর্মচারীরা বলছেন, আমরা একেকজন ১৫-২৩ বছর ধরে এখানে চাকরি করছি। আমাদের নিয়োগের সময় মেয়রদের নেতৃত্বে গঠিত নিয়োগ বোর্ডে আমাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সাথে সাথে সব মেয়রদের আমলে আমরা নিয়মিত বেতন পেয়েছি। কিন্তু পৌর প্রশাসক গত ৩ মাস ধরে আমাদের বেতন বন্ধ করে রেখেছেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা এ.এফ.এম এনামুল হক অফিসে অনুপস্থিত থাকার কারণে আর্থিক লেনদেনসহ নাগরিক সুবিধা দারুনভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। গত ১ সপ্তাহ ধরে শহরের বৈদ্যুতিক পিলারে কোন আলো জ¦লছে না। যে কারণে সন্ধ্যার পর পৌর এলাকার রাস্তাঘাট থাকছে অন্ধকারাচ্ছন্ন। পরিষ্কার না করার কারণে পৌরসভার ড্রেনগুলো ময়লা-আবর্জনায় বন্ধ হয়ে রয়েছে। এ দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকারি কাজে সার্বক্ষণিক ব্যস্ত থাকার কারণে পৌরসভার দাপ্তরিক কাজে সময় দিতে পারছেন না। যে কারণে পৌরসভার সার্বিক কাজে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে নির্বাহী অফিসার উছেন মে’র সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।