Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒উপদেষ্টার কাছে বিনিয়োগকারীদের স্মারকলিপি

যশোর আইটি পার্ক থেকে টেকসিটিকে অব্যাহতিসহ ১০ দফা দাবি

এখন সময়: সোমবার, ৪ নভেম্বর , ২০২৪, ০৯:০০:২১ পিএম

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবিলম্বে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক যশোরের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব থেকে টেকসিটি নামক কোম্পানিকে অব্যাহতি, টেকসিটির সঙ্গে গণবিরোধীতে রাষ্ট্রের কত টাকা ক্ষতি হয়েছে। অনিয়ম-দুর্নীতির করে টেকসিটি কত টাকা আত্মসাৎ করেছে তা তদন্ত করে জনসম্মক্ষে প্রকাশ করাসহ ১০ দফা দাবিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক যশোরের বিনিয়োগকারীরা। সোমবার সকালে যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি দেয়া হয়।  

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর যশোরে দেশের প্রথম সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনের অল্প কয়েকদিনের মাথায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম অলিগার্ক ওয়াহেদ শরীফের কোম্পানি টেকসিটি বাংলাদেশ লিমিটেডকে ‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক’ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। দেশবাসীর অগোচরে অত্যন্ত গোপনে ‘গণবিরোধী চুক্তির’ মাধ্যমে এই কাজটি করা হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী পার্ক থেকে আহরিত রাজস্বের ৮২ শতাংশ পাবে টেকসিটি, যাদের এখানে কোনো বিনিয়োগ নেই। আর জনগণের ট্যাক্স ও বিশ্বব্যাংকের ঋণের টাকায় নির্মিত প্রকল্পের রাজস্ব আয়ের মাত্র ১৮ শতাংশ পাবে বাংলাদেশ সরকার। টেকসিটির দুর্নীতি, অনিয়ম-অব্যবস্থাপনাও ছিল ওপেন সিক্রেট।

অসম, গণবিরোধী এই চুক্তি বাতিলের দাবিতে স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন। এই বিষয়ে গণমাধ্যমে বহু রিপোর্টও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সন্তান ও তাঁর আইসিটি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের বন্ধু পরিচয়ধারী ওয়াহেদ শরীফের দৌরাত্ম্য এতো বেশি ছিল যে, টেকসিটিকে হটানোর সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লব জয়যুক্ত হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ জনতা শেখ হাসিনা পার্কে চড়াও হয়। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা পার্কটি থেকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নাম বাদ দেয়া, পতিত সরকারের অলিগার্ক ওয়াহেদ শরীফের কোম্পানির হাত থেকে সরকারি পার্কটিকে অবমুক্ত করা, তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির অনুসন্ধান করা, বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আদায়যোগ্য স্পেস রেন্ট, সার্ভিস চার্জ ও বিদ্যুৎ বিল বাংলাদেশ হাই-টেক পার্কের অ্যাকাউন্টে গ্রহণ, যশোরের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ স্পেস রেন্ট নির্ধারণ, বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করে যৌক্তিক বিল প্রদান ও আগে ইস্যু করা ভৌতিক বিল প্রত্যাহারসহ নানা দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলেন।

স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, এমন পরিস্থিতিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের উপস্থিতিতে গত ২৮ আগস্ট তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা হয়। সেই সভায় যশোরের ‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক’-এর নাম পরিবর্তন করে ‘সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, যশোর’ নামকরণ এবং বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে টেকসিটির সম্পাদিত গণবিরোধী চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। দায়-দেনা নিষ্পত্তিপূর্বক টেকসিটিকে অপসারণের জন্য ওই সভায় উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটিও গঠিত হয়। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা গভীর হতাশার সাথে লক্ষ্য করছেন, প্রায় দুই মাস পার হতে চললেও সরকারি সিদ্ধান্ত কার্যকরের কোনো উদ্যোগ নেই। শেখ হাসিনা সরকারের অলিগার্ক কোম্পানি টেকসিটিও বহালতবিয়তে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি, চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তের পর তারা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে স্পেস রেন্ট ও বিদ্যুৎ বিল আদায়ের জন্য নোটিশ জারি করছে।

উল্লেখ্য, স্থানীয় বিনিয়োগকারীগণ অব্যাহতিপ্রাপ্ত টেকসিটির সঙ্গে কোনো ধরনের লেন-দেন করতে অসম্মত। ফলে দিন দিন বিদ্যুৎ বিলের বোঝা বাড়ছে। এমন অবস্থায় ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের আল্টিমেটাম দিয়েছে। কিন্তু বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাদের ব্যাংক হিসাব নম্বর পাওয়া যায়নি। এখন পার্কের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে তার দায়-দায়িত্ব এককভাবে টেকসিটি কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে।

বিনিয়োগকারীরা দাবিসমূহ সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, যশোরে আগের মতো ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার মন্তব্যও করেন উপদেষ্টার নিকট।

স্মারকলিপি দেবার সময় উপস্থিত ছিলেন যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক  ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসান কবীর, সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ শাহ জালাল, সহ-সভাপতি ইমানুর রহমান ইমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হাসনাত, কোষাধ্যক্ষ নাহিদুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য আনিকা হাসান প্রমুখ।

 

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)