বাবুল আক্তার, চৌগাছা : গাইনি চিকিৎসক না থাকার কারণে দেশসেরা যশোরের চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রয়েছে। চৌগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত জুনিয়র গাইনি কনসাল্টটেন্টকে বদলি করার কারণে গাইনি ও প্রসূতি সেবায় দেশসেরা ১৫ বারের পুরস্কারপ্রাপ্ত এই মডেল হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রয়েছে। ফলে গরিব রোগীর অভিভাবকরা বিভিন্ন ক্লিনিকে অপারেশন করাতে গিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন।
জানাযায়, গত একমাস আগে মেডিকেল অফিসার (অ্যানেস্থেসিয়া) ডা. রবিউল ইসলাম তুহিন প্রেষনে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চলে যান। মুলত তখন থেকেই দেশসেরা এই হাসপাতালের সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রয়েছে। ২১ অক্টোবর জুনিয়ার কনসাল্টটেন্ট উম্মে হাবিবা ফোয়ারাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার পদে যোগদান করায় পদটি শূন্য হয়ে যায়। চৌগাছা সরকারি হাসপাতালে এই পদে অন্যকোনো গাইনি কনসাল্টটেন্টকে পদায়ন করা হয়নি। এজন্য এখানে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রয়েছে। এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিমাসেই প্রায় ১৫০/২০০ জন প্রসূতিকে ডেলিভারি করানো হয়।
বর্তমানে হাসপাতালটিতে গাইনি চিকিৎসক ও এনেসথেসিওলজিস্ট দুটি পদই খালি। একজন গাইনি চিকিৎসক পদায়ন করা হলেও এনেসথেসিওলজিস্ট প্রেষণে থাকায় পদটি শূন্য হয়নি। যে কারণে এই পদে কাউকে সহজেই পাওয়া যাবে বলে শঙ্কিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সুরাইয়া পারভীন বলেন, চৌগাছা মডেল হাসপাতালে প্রয়োজনে বিনামূল্যে গরিব গর্ভবতীদের সিজার করানো হতো ডিমান্ড সার্ভিস ফান্ড (ডিএসএফ) এর মাধ্যমে। কিন্তু গাইনি ডাক্তার না থাকায় সিজার বন্ধ রয়েছে। ফলে গরিবদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করে ক্লিনিকে সিজার করতে হচ্ছে।
এছাড়া হাসপাতালের চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৩২টি। কর্মরত দেখানো হচ্ছে ১৬ জন চিকিৎসককে। কিন্তু এই ১৬ জনের ৩ জন দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছে। আরো ৬ জন রয়েছে প্রেষনে। বাকি ৭ জনের ২ জন প্রশাসনিক পদে কর্মরত। বর্তমানে মাত্র ৫ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে দেশসেরা এই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা. লুৎফুন নাহার লাকি বলেন, আমি নিজেই এখানে আর নেই। যিনি আসবেন তিনিই ভালো বলতে পারবেন কিভাবে এখানে সিজারিয়ান কার্যক্রম চলবে।
যশোর জেলার সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসান বলেন, আমি জানতে পেরেছি চৌগাছা হাসপাতালের অবস্থা নাজুক। তিনি ডাক্তারদের বদলি এবং পদায়ন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার। তার পরেও বিষয়টি জানতে পেরে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আশা করা যায় দুই একদিনের মধ্যে একজন গাইনি চিকিৎসক চৌগাছায় যোগদান করবেন।