মিরাজুল কবীর টিটো
যশোর সদর উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, গণ্যমান্য ব্যক্তি, সাংবাদিক ও সুধী সমাজের সাথে মতবিনিময় করেছেন নবাগত জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম। শনিবার বেলা ১২টায় উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ছিল এই আয়োজন।
এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছি। পুরাতন সবকিছু ভুলে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। অতীতের বিভাজনের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাজ করবো আমরা।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭১ সালের ইতিহাসকে যারা কলঙ্কিত করেছে; তারা দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছে। ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যারা কলঙ্কিত করবে তারাও বিতাড়িত হবে। দেশের মানুষের দীর্ঘদিনের যে কষ্ট ছিল; সেটা হল বৈষম্য। সেই বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্দোলনের ঐতিহাসিক বিজয় হয়েছে ৫ আগস্ট। দেশ ও সমাজের পরিবর্তন করতে হলে আগে নিজেদের নীতি ও নৈতিকতার পরিবর্তন করতে হবে।
তিনি বলেন, সরকারি অফিসে যাতে মানুষের চাহিদা অনুযায়ী সেবা দেয়া হয় সেই নির্দেশনা দেয়া হবে। এতে যদি কোনো ভুল হয় তাহলে সেটি জানাবেন। ৫ আগস্টের বিজয় অর্জন করতে যে ঐক্য তৈরি হয়েছিল ;সেটা আর নেই। ঐক্য না থাকলে ফ্যাসিবাদীরা ষড়যন্ত্র করবে। এজন্য সজাগ থাকতে হবে।
কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যশোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যশোরের পরিস্থিতি ভাল ছিল। আমরা চাই পুলিশকে কোনো খারাপ কাজে ব্যবহার করা হবে না।
সুধীজনরা বক্তব্যে বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে আগের চালের ডিলার বাদ দিয়ে নতুন ডিলার নিয়োগ দিতে হবে। আগে এসব ডিলারের কাছ থেকে ধনীরা গরীব মানুষের চাল নিয়ে গরুকে খাইয়েছে। এখনও চাঁদাবাজি চলছে। সেটা বন্ধ করতে হবে। এখনো সব অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। সেগুলো উদ্ধার করতে হবে। বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা যাতে প্রকৃতরা পান সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এর আগে চেয়ারম্যানরা এসব ভাতার টাকা মেরে খেয়েছে।
সদর উপজেলার নতুন নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) এসএম শাহীন, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রবিউল ইসলাম, কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী, সমবায় কর্মকর্তা রণজিৎ কুমার রায়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু মাউদ, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল খোকন, সদর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আরিফুর রহমান কল্লোল ও আমীর আশরাফ আলী, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রহমান, রুপদিয়া শহীদ স্মৃতি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ আইয়ুব হোসেন প্রমুখ। মতবিনিময় সভা পরিচালনা করেন সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, এই সভায় যোগদানের আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন চাঁচড়া, দেয়াড়া, ফতেপুর, নওয়াপাড়া, কাশিমপুর ও বসুন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা। কিন্তু সভায় গেলেও তাদের বের দেয়া হয়। উপজেলা পরিষদের ডেপুটি প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম তাদের বলেছেন; আপনারা মিটিংয়ে থাকতে পারবেন না।