নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে যুবদল নেতা বদিউজ্জামান ধনি হত্যা মামলায় ৬ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুই জনকে খালাস দেয়া হয়েছে। বুধার এক রায়ে (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মতিয়ার রহমান এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো, যশোর শহরের রেলরোড ফুড গোডাউনের উত্তর পাশের ফরিদ মুন্সির ছেলে রায়হান মুন্সী, আশ্রম রোডের পূর্বাংশের আব্দুল আলিমের ছেলে আমজাদ হোসেন আকাশ, বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক ফুড গোডাউনের পাশের মিরাজ বিশ্বাসের ছেলে মন্টু ওরফে আলী রাজ বিশ্বাস অপূর্ব ওরফে হিটার রাজ, বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক মসজিদ গলির রইচ উদ্দীনের ছেলে আলামিন, শংকরপুর হারান কলোনির উত্তর পাশের বাবু মীরের ছেলে ইছামীর ওরফে ইছা ও চাঁচড়া রায়পাড়ার আমিনুল ইসলামের ছেলে রাইসুল ইসলাম রিজভী।
মামলার বাদী মনিরুজ্জামান মনি জানান, তিনি এই রায়ে সন্তুষ্ট নন। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। তিনি আরও জানান, রায় ঘোষণার পর মামলার আসামিরা তাদের হুমকি দিয়েছে। এ কারণে নিহতের স্ত্রী শারমিন আক্তার খুলনা সদর থানায় জিডি করেছেন।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১২ জুলাই দুপুর পৌনে ১২টার দিকে যশোর শহরের শংকরপুর চোপদারপাড়া আকবরের মোড় এলাকার নিজ বাড়ির বিপরীতে একটি ওষুধের দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন যুবদল নেতা বদিউজ্জামান ধনি। এ সময় সন্ত্রাসীরা সেখানে গিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। ভর্তির পর দুপুর পৌনে ১টার দিকে মারা যান বদিউজ্জামান ধনি। এ ঘটনায় নিহতের বড়ভাই মনিরুজ্জামান মনি বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন।
এ মামলার তদন্ত শেষে এজাহারভুক্ত সকল আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালি থানা পুলিশের এসআই আনছারুল হক। মামলাটি প্রথমে বিচারের জন্য যশোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ও পরে দ্রুত বিচারের জন্য খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হয়।
এ মামলার দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে ওই ৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুই জনকে খালাস দেয়া হয়েছে।
খালাস প্রাপ্ত দুজন হলো, রেলরোড ফুড গোডাউনের দক্ষিণ পাশের শামছুল আবেদীন মিলন ও শংকরপুর চোপদার পাড়া আকবারের মোড়ের শামীম আহম্মেদ মানুয়া। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে আকাশ ও ইছা মীর বাদে অপর চার আসামি কারাগারে আটক।