বিল্লাল হোসেন: যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের একমাত্র আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন বিকল হয়ে গেছে। ফলে গত এক সপ্তাহ ধরে রোগীদের আল্ট্রাসনো কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। রেসরকারি হাসপাতালে আল্ট্রাসনো করতে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্মবিত্ত মানুষ। কবে নাগাদ মেশিন ঠিক তবে নিশ্চিত নন হাসপাতালের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, সরকারি এই হাসপাতালে আল্ট্রাসনো করে রোগীরা আর্থিকভাবে অনেকটা উপকৃত হয়। কেননা এখানে পেটের একাংশের খরচ নেয়া হয় ১১০ টাকা। আর পুরো পেটের আল্ট্রাসনো করতে ব্যয় হয় মাত্র ২২০ টাকা। একই আল্ট্রাসনো বেসরকারি হাসপাতালে করতে খরচ ৮ থেকে ১২ শ’ টাকা। প্রতিষ্ঠানের মান বুঝে টাকা কম বেশি হতে পারে। হাসপাতালের আল্ট্রাসনো কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রোগীদের ছুটতে হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে বাড়তি টাকা দিয়েই আল্ট্রাসনো করে বাড়ি ফিরছেন তারা।
পেটের সমস্যা নিয়ে গাইনী চিকিৎসক দেখাতে এসেছিলেন গৃহবধু বিথী খাতুন। চিকিৎসক নির্দেশনা দিলেও অর্থাভাবে আল্ট্রাসনো করতে পারেননি। কেননা হাসপাতালের আল্ট্রাসনো বিভাগে গিয়ে জানতে পারেন মেশিন নষ্ট তাই কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কাছে বেশি টাকা না থাকায় আল্ট্রাসনো না করে বাড়ি ফিরে যান।
আরেক রোগী ওলিয়ার রহমানের স্বজনরা জানান, মেশিন নষ্ট থাকায় হাসপাতালে আল্ট্রাসনো করতে পারেননি। ১২শ’ হাজার টাকা দিয়ে বেসরকারি ক্লিনিক থেকে আল্ট্রাসনো করাতে বাধ্য হয়েছেন। হাসপাতালের মেশিন সচল থাকলে এই আল্ট্রাসনো করাতে খরচ হতো ২শ ২০ টাকা।
রোকসানা খাতুন নামে এক রোগী জানান, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক থেকে আল্ট্রাসনো করার মতো অর্থ তার কাছে নেই। তাই আল্ট্রাসনো করাতে ব্যর্থ হয়েছেন। আল্ট্রাসনো না করেই বাসায় ফিরে যান । আরেক একদিন এসে করে নেবেন।
আরো কয়েকজন রোগী ও স্বজন জানান, একমাত্র আল্ট্রাসনো মেশিন দিয়ে দেশসেরা এই হাসপাতালের কার্যক্রম চলছিলো। এটা রীতিমতো দুঃখজনক। মেশিনটি নষ্ট হওয়ার কারণে কার্যক্রম বন্ধ থাকার বিষয়টি মোটেও সন্তোষজনক না। এটা দ্রুত মেরামত করা অথবা নতুন একটি ডিজিটাল মেশিন স্থাপনের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের চিন্তা করা উচিৎ। অন্যথায় তাদের মতো দুরদুরন্ত থেকে আসা মানুষের চরম ভোগান্তির শিকার হবেন। পাশাপাশি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন ।
এই বিষয়ে রেডিওলজিস্ট বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আবু সাঈদ জানান, একমাত্র আল্ট্রাসনো মেশিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিভাগটি অচল হয়ে গেছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। ঢাকা থেকে টেকনিশিয়ানও এসেছিলো।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন অকেজো হয়ে পড়ে আছে। যে কারণে বিভাগটির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। কবে নাগাদ মেশিন সচল হবে তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে শিগগির আল্ট্রাসনো বিভাগ সচলের চেষ্টা অব্যাহত আছে।