মোরেলগঞ্জে ঘের ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, আহত ১০

এখন সময়: মঙ্গলবার, ৭ মে , ২০২৪, ০৩:১০:৫৯ পিএম

 

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: মোরেলগঞ্জের নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের গুয়াতলা গ্রামে শুক্রবার সকালে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে আ. হাকিম জোমাদ্দার (৬৫) নামে এক মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় মারপিটে আহত হয়েছে নারীসহ ১০। এদের মধ্যে গুরুতর ৫ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গুয়াতলা গ্রামে মৎস্যঘের ব্যবসায়ী আ. হাকিম জোমাদ্দারের সঙ্গে ৬ মাস ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে প্রতিবেশী মোজাম্মেল হাওলাদারের সঙ্গে। এ বিরোধের জের ধরে শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে মোজাম্মেল হাওলাদারের ছেলে শহিদ হাওলাদার, নুরুল ইসলাম হাওলাদার, কবির হাওলাদারসহ ২০/৩০ জনের একটি সঙ্গবদ্ধ দল দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আ. হাকিম জোমাদ্দারের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায়। হামলাকারীরা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আ. হাকিম জোমাদ্দারকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। এ সময় তার স্ত্রী জামিলা বেগম (৫০) স্বামীকে ঠেকাতে গেলে তাকেও লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হেেছ।

এরপর তারা আ. হাকিম জোমাদ্দারের পাশেই মামার বাড়িতে গিয়ে হামলা চালিয়ে মামা গুয়াতলা জামে মসজিদের ইমাম আলম হাওলাদারকে (৭০) কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।

এ খবর ছড়িয়ে পরলে আ. হামিক জোমাদ্দারের ভাই আ. লতিফ জোমাদ্দার (৫০) ছোট ভাই আ. রশিদ জোমাদ্দার (৪২) ও বোন পারুল বেগম (৫৫) নিহত আ. হাকিম জোমাদ্দারের বাড়িতে যাবার পথিমধ্যে হামলাকারীরা তাদের ওপর চড়াও হয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে চলে যায়।

এ ঘটনার পরপর স্থানীয়রা আ. হাকিম জোমাদ্দারসহ আহতদের উদ্ধার করে মোরেলগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আ. হাকিম জোমাদ্দারকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর ৫ জন আহতকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

নিহত আ. হাকিম জোমাদ্দারের মেঝ ভাইয়ের ছেলে আল আমিন জোমাদ্দার জানান, তার চাচা আ.হাকিম জোমাদ্দারের সঙ্গে ৬ একর ১৯ শতক জমি নিয়ে প্রতিবেশী মোজাম্মেল হাওলাদারের বিরোধ রয়েছে। আদালতে মামলাও চলছে। সকালে মোজাম্মেল হাওলাদারের ছেলেরা ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে আমাদের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে তার চাচা আ. হাকিম জোমাদ্দারকে হত্যা করে এবং ৮/১০ জনকে রক্তাক্ত জখম করেছে। প্রশাসনের কাছে তিনি হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্ত মূলক বিচারেরও দাবি জানান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার শাহরিয়া ফাত্তাহ বলেন, গুয়াতলা গ্রামের ৬ জন জখমীকে ১০টা ২০ মিনিটে হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে আ. হাকিম জোমাদ্দার মৃত অবস্থায় ছিলো, তার মাথায় ও পায়ে কোপের চিহ্ন রয়েছে। অপর আহতদের ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

মোরেলগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বলেন, গুয়াতলা গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে ঘের ব্যবসায়ী আ. হাকিম জোমাদ্দার নিহত হওয়ার খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালে নিহতের মৃতদেহ সুরতহাল সম্পন্ন করা হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।