মশিয়াহাটীতে ভাটি পূজো  ঘিরে লোকজ উৎসব শুরু

এখন সময়: সোমবার, ২৯ এপ্রিল , ২০২৪, ০৬:৫২:৩৯ পিএম

 

উৎপল বিশ্বাস, নেহালপুর : মণিরামপুরের মশিয়াহাটীতে শুরু হয়েছে ভাটি পূজো। মঙ্গলবার সকালে শুরু হয়ে চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। এটি একটি স্থানীয় লোকজ উৎসব। ভাটি পূজো একটি সনাতনী লৌকিক পূজো। কৃষিজীবী মানুষের মধ্যে এই পূজোর চল আছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল অঞ্চলে এটি অনুষ্ঠিত হয়। এই অঞ্চলের গার্হস্থ্য মানুষেরা তাদের গৃহপালিত পশুর বালাই এবং ঘা-পাঁচড়া হতে মুক্তির জন্য এই পূজাপদ্ধতি পালন করে। তারই ধারাবাহিকতায় মশিয়াহাটীতে বংশ পরম্পরায় চলে আসছে এই পূজো। এখানে ভক্তবৃন্দের আগমন ঘটেছে প্রচুর।

বাংলাদেশের বৃহত্তর যশোর-খুলনা, বরিশাল-ফরিদপুর অঞ্চলের মানুষ ভাটি পুজো করে। মূলত ভাটি অঞ্চলের পুজো বলেই একে ভাটি পুজো বলা হয়। ভাটি অঞ্চলের কৃষিজীবী নমঃশূদ্র, কাপালি, পুণ্ড্রক্ষত্রিয়, মুন্ডা, ঋষি, বাগদী প্রভৃতি কৃষিজীবী জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই পূজোর প্রচলন আছে। এছাড়া বাইতি, বাওয়ালি, মাওয়াল, মাঝি, ঘোষ, কর্মকার, কুমার, ছুতার, নরসুন্দর প্রভৃতি পেশাজীবী মানুষের মধ্যেও ভাটি পূজা হতে দেখা যায়। বর্তমানে বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে যারা শাস্ত্রীয় ধর্মের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে তাদের মধ্যে এই পূজা পদ্ধতি পালন করার রেওয়াজ কমে গেছে।

গাছ তলায় বসে গাছের গোড়ায় প্রথমে তেল দেয়া হয়। এর পর জল, সিঁদুর দেয়া হয়। প্রসাদ দেয়া হয়। প্রসাদ হিসেবে খেঁজুর গুড়ের চিনি, বাতাসা, নাড়ু, নারকেল, খৈ দেয়া হয়। নৈবেদ্য দেয়ার পর ভাট পাতাগুলো নিয়ে আসা হয়। এর পর গরুকে পুকুরে নিয়ে গা ধোওয়ানো হয়। এক একটি ভাঁট পাতা দিয়ে এক একটি গরুর শরীরকে পরিষ্কার করা হয়। বাড়ি ফিরে পরিবারের সবাইকে স্নান করতে হয়। এরপর সন্ধ্যায় পাড়ার সবাই মিলে মাঙন করা চাল-ডাল-সব্জী দিয়ে খিচুড়ি রেঁধে খাওয়া হয়। এভাবেই শেষ হয় ভাটি পুজো উৎসব।