তালায় শতদল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিবিজিএসআই প্রণোদনার টাকা লোপাটের অভিযোগ

এখন সময়: মঙ্গলবার, ৭ মে , ২০২৪, ০৮:৪৬:০০ এম

শাকিলা ইসলাম জুঁই, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার শতদল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পারফর্মেন্স বেজড প্লান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশনস’র (পিবিজিএসআই) প্রণোদনার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কার্ত্তিক চন্দ্র সরকার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ। প্রণোদনার ৫ লাখ টাকার অধিকাংশ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ভুয়া বিল ও ভাউচারের মাধ্যমে তুলে লোপাট করা হয়।
পিবিজিএসআই’র প্রণোদনার টাকায় বইপত্র, শিক্ষা উপকরণ, লাইব্রেরি ও গবেষণাগার সরঞ্জাম, বিশুদ্ধ পানির টিউবওয়েল, ফিল্টার সংযোজনসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় করার কথা। সুবিধা বঞ্চিত, ভূমিহীন, গৃহহীন, অতিদরিদ্র, এতিম, প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের এই প্রণোদনার টাকা থেকে সহায়তা দেয়ার কথা।
কিন্তু প্রধান শিক্ষক তার নিজের ক্ষমতা বলে প্রণোদনার টাকা নয়ছয় করেছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের সহায়তায় ব্যয়ের ৭৫ হাজার টাকা থেকে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে দেয়ার কথা। তবে অনেকেই তা পায়নি। এসব টাকা প্রদানের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও বৈষম্য করা হয়েছে।
মুড়াকুলিয়া গ্রামের শাহাদাত হোসেনের মেয়ে ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার তন্নী একাই পেয়েছে ১৫ হাজার টাকা। ফারুক হোসেনের ছেলে মুসাব্বির সরদার ৫ হাজার টাকা। তেঁতুলিয়া গ্রামের ইনছার আলীর ছেলে ৯ম শ্রেণির মাহফুজ আলী পেয়েছে ৫ হাজার টাকা। ৭ম শ্রেণির আবদুল আলীম ৫ হাজার টাকা। ৬ষ্ঠ শ্রেণির তাসরিন খাতুন পেয়েছে ৩৫০০ টাকা। এসব টাকার অধিকাংশ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ফ্যাসিলিটি উন্নয়ন খ্যাতের ৫০ হাজার টাকা ঠিকমত ব্যয় করা হয়নি। হুইলচেয়ার কিনে দেয়ার কথা থাকলেও দেয়া হয়নি। বইপত্র, লাইব্রেরি, শিক্ষা উপকরণ ও গবেষণাগার সরঞ্জাম খাতে বরাদ্ধ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা নয়ছয় করে প্রধান শিক্ষক তা হাতিয়ে নিয়েছেন। মেয়েদের জন্য পৃথক শৌচাগার ও কমন রুমের উন্নয়ন ঠিকমতো করা হয়নি।
শতদল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কার্ত্তিক চন্দ্র সরকার বলেন, প্রণোদনার টাকা ছাত্র-ছাত্রী ও ১১ শিক্ষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। লাইব্রেরির জন্য বরাদ্দের টাকায় চারটি আলমারি, বই ও ছাত্রীদের কমন রুমের পাশে একটা টয়লেট নির্মাণ হয়েছে।
তিনি বলেন, সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের ৫ হাজার করে টাকা দেয়ার কথা ছিল। শিক্ষা কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে ২৫ জনের জায়গায় ৪১ জনকে টাকা দিয়েছি। শিক্ষকদের জন্য বরাদ্দ ১ লাখ টাকার জন্য ১০% হারে দশ হাজার। আর বাকি অর্থের ভ্যাট হিসেবে ৩২ হাজার টাকা দিয়েছি। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হতে না পারায় একজন এসব নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, বরাদ্দ পাওয়ায় টাকার অতিরিক্ত ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থীকে টাকা কম দেয়া হয়নি।
তালা সদর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ ফিরোজ আহমেদ জানান, কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।