আটকের ৪ ঘণ্টা পর আ.লীগ নেতা মুক্ত!

এখন সময়: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল , ২০২৪, ০১:০০:২৭ এম

পাটকেলঘাটা প্রতিনিধি : জামায়াত-বিএনপি নাশকতা মামলার তদবিরসহ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায় পুলিশের হাতে আটকের ৪ ঘন্টা পর মুক্তি মিলেছে রফিকুল ইসলাম নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার। রোববার সকালে তাকে পাটকেলঘাটা থানার  দাদপুর মেল্লেকবাড়ি বাড়ি এলাকা থেকে তাকে  আটক করা হয়। পরে তালা উপজেলা আ’লীগ সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষ সনৎ কুমারের জিম্মায় মুক্তি মেলে বলে স্থানীয় আ’লীগ নেতাদের দাবি। অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম পাটকেলঘাটা থানার রাঢ়ীপাড়া গ্রামের মৃত শহিদুল মোড়লের ছেলে ও কুমিরা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি সোমবার সকালে পাটকেলঘাটা থানার নাশকতা মামলার আসামিদের জামিন করানোর জন্য আদালতে হাজির হন  রফিকুল ইসলাম। ওই সময়  একজন উৎসুক ব্যক্তি ৩০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও করেন। পরিবর্তে সেটি স্থানীয় পত্রিকাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ২০ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে আদালতে আসামিদের সাথে গভীর সখ্যতা দেখা যায়  রফিকুলের। 

মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ৭ ডিসেম্বর রাতে পাটকেলঘাটা থানার এস আই আমির হোসেন বাদী হয়ে ৩৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩৫/৪০ জনকে আসামি করে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনাস্থলের প্রতিষ্ঠানের সভাপতি রফিকুল ইসলাম। এছাড়া  নাশকতা ঘটানোর মূল পরিকল্পনাকারী ওই মাদরাসার সুপার মাওলানা সাইফুদ্দীন।

মামলার আসামিরা সকলে জামায়াত ও বিএনপি’র সক্রিয় নেতাকর্মী বলে সুত্রে জানা যায়। এদিকে ঘটনার দিন আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিতে হাফিজুর সরদার (৩০), মালেক সরদার (৫৫), সেলিম হোসেন (৪০), মাও: সাইফুদ্দীন (৪৮), আজিজুল সরদার (৪৫), আব্দুল  হাই, মাও: (৪৫), ইদ্রিস আলী মোড়ল (৪৫), জাকির মাও: (৪২) ও আব্দুর রাকিব (৪৮) ওই দিন  আদালতে সহযোগী হিসাবে রফিকুল ইসলামকে দেখা যায় বলে স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি।

কুমিরা ইউনিয়ন আ’লীগের দপ্তর সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন,  ক্ষমতা পাওয়ার পর আ’লীগ নেতা রফিকুল বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। বর্তমানে কুমিরা এলাকায় জমি দখলসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়ায়। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে লোকজনকে জিম্মি করে টাকা  আদায় করে বেড়াত।

তার এই অপকর্মের প্রতিবাদ করে তাকে বিভিন্ন সময় লাঞ্ছিত হতে হয়েছে। একসময় তার  টালির ঘর ছিল বর্তমানে সে তিন তালা বাড়ির মালিক। তার এই অপকর্ম বন্ধ হয় বহিষ্কার দাবিতে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

কুমিরা ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান মিঠু বলেন, যারা  বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে জামাত বিএনপির দোষর হয়ে তাদের ধিক্কার জানায়। কুমিরা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম দলীয় পদে থেকে জামাত বিএনপির দোশর হয়ে কাজ করেন। এছাড়া  তাদের কাছ থেকে  আর্থিক সুবিধাসহ নিয়োগ বাণিজ্য করে গড়ে তুলেছেন বিলাসবহুল বাড়ি। এছাড়া অবৈধ টাকা দিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এবিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি কখনও নাশকতা মামলার আসামিদের পক্ষে নন। তবে সেদিন ব্যক্তিগত কাজে অ্যাড. তপন এর সাথে দেখা করতে গেলে আসামিদের সাথে দেখা হয়েছিল। তাকে নিয়ে মিথ্যাচারসহ  রাজনৈতিক ভাবে  হেয়পতিপন্ন করার জন্য একটি স্বার্থন্বেষী মহল গুজব  ছড়াচ্ছে। পুলিশ আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসন আমাকে বিভিন্ন বিষয়ে জানাশোনার জন্য তাকে ডেকেছিল। বাড়ি ও জমির বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কোন প্রকার  মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিষয়টি নিয়ে পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কাঞ্চন কুমার  রায়ের সাথে কথা বললে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।