গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

যশোর-চুয়াডাঙ্গায় শীত পড়া শুরু করেছে।

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২৪, ০৩:১২:২৩ এম

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, জানুয়ারি মাস আমাদের দেশে সবচেয়ে শীতল থাকে। গত বছর জানুয়ারিতে স্বাভাবিকের চেয়ে ১ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা ছিল। তবে এবার নভেম্বর থেকে দেশের উত্তরাঞ্চল ও যশোর-চুয়াডাঙ্গায় শীত পড়া শুরু করেছে। মনে হচ্ছে এবার শীত আগেভাগে নামতে শুরু করেছে।

অন্যদিকে আবহাওয়াবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, বিশ্বের আবহাওয়া চক্রে এ বছরটা একটু অস্বাভাবিক আচরণ করছে। এর আগে টানা তিন বছর প্রশান্ত মহাসাগরে লা নিনার প্রভাব ছিল না। সাধারণত এক থেকে দুই বছর ওই অঞ্চলে লা নিনা থাকে। যে বছর লা নিনা থাকে, সে বছর প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝবরাবর তাপমাত্রা বেড়ে একটি উষ্ণ রেখা তৈরি হয়। আর বাতাস পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে বয়ে যায়। এতে উষ্ণ বাতাস ও পানি প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ভারত মহাসাগর হয়ে বঙ্গোপসাগরে চলে আসে। লা নিনার এ ধরনের আচরণের ফলে বাংলাদেশ, ভারত, অস্ট্রেলিয়াসহ বিস্তৃত অঞ্চলে শীতকালে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকে, ফলে শীত বেশি পড়ে।

অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে ভারত মহাসাগরে আবহাওয়ার আরেকটি ধরন বা প্রভাবকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। অনেকটা লা নিনার মতো প্রভাব সৃষ্টিকারী ওই অবস্থাকে বলে ইন্ডিয়ান ওশান ডাইপল বা ভারত মহাসাগর দ্বিচক্র (আইওডি)। এটি সক্রিয় থাকলে বাংলাদেশ, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ায় শীতকাল উষ্ণ থাকে, অর্থাৎ শীত কম পড়ে। গত বছর আইওডি সক্রিয় থাকায় বাংলাদেশে শীত কম ছিল বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা।

তবে এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়া সরকারের আবহাওয়াবিষয়ক সংস্থা ব্যুরো অব মেট্রোলজি থেকে আগামী এপ্রিল পর্যন্ত আবহাওয়া কেমন যাবে, তার একটি পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আইওডি সক্রিয় নেই। এটি নেতিবাচক অবস্থায় আছে। ফলে এবার ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগর এলাকায় তাপমাত্রা কমবে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাশেদ চৌধুরী এল নিনো-লা নিনা নিয়ে তিন যুগ ধরে গবেষণা করছেন। তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এবার বাংলাদেশে শীতকাল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দীর্ঘ হবে, তীব্রতাও বেশি থাকতে পারে। তবে বঙ্গোপসাগর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উষ্ণ থাকতে পারে। ফলে এবার নভেম্বর-ডিসেম্বরে বঙ্গোপসাগরে আরও বেশি নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। যে সময়টাতে ঘূর্ণিঝড় ও নিম্নচাপের সময় বৃষ্টি বেড়ে শীত কমতে পারে। পরে আবারও শীত বাড়তে পারে।