মারুফ কবীর : বাংলাদেশ ক্রিকেট আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স এসোসিয়েশন যশোর জেলা শাখার মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। মেয়াদ শেষ হলেও নির্বাচন দিচ্ছেন না বর্তমান কমিটি। এমনকি মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি বিশেষ সভা করে ৪ জনকে লাইফ মেম্বার ও ৩ জনকে সক্রিয় সদস্য করেছে, যা গঠনতন্ত্র বিরোধী। এ নিয়ে সাধারণ সদস্যদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়,২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর এসোসিয়েশনের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচিত কমিটি ২১ সেপ্টেম্বর তাদের প্রথম সভা করে। সে হিসাবে তাদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর। তার পরও বর্তমান কমিটি নির্বাচন না দিয়ে সংগঠনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। সংগঠনের গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ১৩ ধারার ৬২ অনুসারে মেয়াদ শেষে দুই মাস পূর্বে নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা, ইতিমধ্যে কমিটির মেয়াদ একমাস অতিক্রান্ত হতে গেছে। অভিযোগ উঠেছে নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচন না দিয়ে নিজেদের পছন্দের ভোটর বৃদ্ধিতে ব্যস্ত আছেন বর্তমান কমিটি। মেয়াদ শেষের হওয়ার পরেও ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছেন।
সংগঠনের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পদক আসাদুল্লাহ খান বিপ্লবের নেতৃত্বাধীন এই কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণের পর নতুন লাইফ মেম্বার এবং সক্রিয় সদস্যদের অনুমোদন দিয়েছেন। যা মূলত পকেট ভোট ব্যাংক হিসেবেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এই নিয়ে গত বুধবার (১৫ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত মেয়াদ উত্তীর্ণ নির্বাহী কমিটির সভায় ব্যাপক হট্টগোল এবং ওয়াক আউট এর ঘটনা ঘটেছে। ক্ষুব্ধ নির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রতিবাদ সরুপ সভার অ্যাটেনডেন্স খাতায় স্বাক্ষর না করাই তাকে সভা ত্যাগ করতে বলা হয় এবং তিনি অনিয়মের প্রতিবাদ জানিয়ে সভা থেকে বের হয়ে আসেন। তার পরও লাইফ মেম্বর ও সক্রিয় সদস্য, সভায় সদস্যদের হট্টগোলের মধ্যেও অনুমোদন দিয়েছে বর্তমান কমিটি। এ কমিটি কিভাবে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয়,যা নিয়ে সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংগঠনের একজন সদস্য বলেন আগের মিটিংয়ে তিনজনকে লাইক মেম্বার করা সিদ্ধান্ত হয়েছিল, কিন্তু অনুমোদনের দিন দেখা গেল তিনজনের পরিবর্তে চারজনের নাম রেজুলেশনে উল্লেখ করা হয়েছে। রেজুলেশনের ৩ কেটে ৪ করা হয়েছে সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। এ ধরনের অস্বচ্ছতার প্রতিবাদে বর্তমান নির্বাহি কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম মিটিং বর্জণ করেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট আম্পায়ার এন্ড স্কোরার্স এসোসিয়েশন যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ খান বিপ্লব কমিটির সকল অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, বিশেষ পরিস্থিতির কারণে বর্তমান কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, শেষ সভায় নির্বাচন কমিশিন গঠন করা হয়েছে এবং ২০ ডিসেম্বর ভোটের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সাধারণ সম্পাদকের এ বক্তব্যকে প্রত্যখান করে সংগঠনের সক্রিয় সদস্য গোলাম তসলিম শিমুল বলেন, যেখানে কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মত প্রতিষ্ঠানের ভোট সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে ক্রিকেট আম্পায়ারদের জেলা শাখার মত একটি ছোট সংগঠনের ভোট আয়োজনে সমস্যা কোথায়? ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার কৌশল মাত্র!। অচিরেই এডহক কমিটি গঠন ও দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানান। বর্তমান নির্বাহি কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন, ৪ জনকে লাইফ মেম্বার এবং ৩ জনকে সক্রিয় সদস্য করা হয়। যা গত ১৫ অক্টোবরের সভায় অনুমোদন দেয়া হয়। তবে তিনি আরও বলেন, রেজুলেশনের লাইফ মেম্বরের জায়গায় ৩ কেটে ৪ করা হয়েছে সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। প্রতিবাদে আমি সভা বর্জণ করি। উল্লেখ্য, একটি সূত্রে জানা যায় আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে সকল জেলা কমিটির নির্বাচন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সেন্টাল কমিটি।