চাঞ্চল্যকর দুই হত্যা মামলার আসামি প্রকাশের লাশ মণিরামপুরের ঘের থেকে উদ্ধার

এখন সময়: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল , ২০২৪, ০৭:০০:২৮ পিএম

মণিরামপুর প্রতিনিধি : মণিরামপুরের আড়পাতা বিলের একটি মাছের ঘের থেকে প্রকাশ চন্দ্র মল্লিক (৪০) নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার নেহালপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপপরিদর্শক আতিকুজ্জামান লাশটি উদ্ধার করেন। 
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, সকালে ঘের মালিক কালিবাড়ি গ্রামের অদুদ শেখ তার মাছের ঘেরে যায়। এ সময় পানিতে লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছেন। সূত্র জানায়, প্রকাশ মল্লিক যশোরের অভয়নগর উপজেলার ফুলেরগাতী গ্রামের প্রহল্লদ মল্লিকের ছেলে। তিনি মণিরামপুরের মধুপুর গ্রামের রফিক হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি বলে জানা গেছে। 
স্থানীয়রা জানিয়েছে প্রকাশ ভাড়ার মোটরসাইকেল চালক হলেও মূলত ছিলেন নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি একটি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। গতবছর রফিক হত্যা ছাড়াও ২০০১ সালের চাঞ্চল্যকর চার হত্যা (ফোর মার্ডার)সহ কয়েকটি মামলার আসামি ছিলেন প্রকাশ মল্লিক। তিনি দীর্ঘদিন পলাতক জীবনযাপন করছিলেন। কয়েকদিন আগে তিনি গোপনে নিজের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। পুলিশ ও এলাকাবাসীর ধারণা তার প্রতিপক্ষদের হাতেই খুন হতে পারে প্রকাশ। পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। 
প্রকাশের স্ত্রী বিউটি মল্লিক জানান, রফিক হত্যা মামলায় আসামি হওয়ার পর বেশ কয়েক মাস পলাতক জীবনযাপন করে তার স্বামী কয়েকদিন আগে বাড়িতে আসেন আদালতে আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি নিতে। প্রকাশ মল্লিকের বড় মেয়ে পিয়া মন্ডল জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে তার বাবা এলাকার পলাশ কুমার নামে এক ব্যক্তির সাথে মোটরসাইকেলে করে নেহালপুরের কালিবাড়ি বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এরপর থেকে তারা কোনো সন্ধান পাননি।
নিহত প্রকাশের বড়ভাই অসিত মল্লিক জানান, তাদের ধারণা পূর্ব শক্রতার জেরে দূর্র্বৃত্তরা হয়ত প্রকাশকে কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে এনে হত্যার পর মৎস্যখামারে ফেলে গেছে। লাশের মাথা ও গলায় ক্ষত (কোপানো) চিহ্ন রয়েছে। পুলিশের ধারণা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে উল্লেখ করে মনিরামপুর থানার ওসি (তদন্ত) গাজী মো: মাহাবুবুর রহমান জানান, প্রকাশের নামে রফিক হত্যা ও চাঞ্চলকর চার হত্যা মামলাসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তবে এর মধ্যে সব মামলাতে প্রকাশ মল্লিক জামিনে থাকলেও রফিক হত্যা মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত হয়ে পলাতক ছিলেন। 
উল্লেখ্য ২০০১ সালে হরিদাসকাটির দিগঙ্গা-কুচলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে চরমপন্থিদের ব্রাশ ফায়ারে নিহত হয় বুলবুল, সেদু, ধনঞ্জয় ও দেবু। এছাড়াও একই বছরে খুন হয় অভয়নগরের যুবক ইকরামুল ইসলাম ইকরাম। চাঞ্চল্যকর এ দুটি মামলার আসামি ছিলেন প্রকাশ মল্লিক। সর্বশেষ গতবছর মনিরামপুরে খুন হয় চরমপন্থি নেতা রফিক। রফিক হত্যা মামলাতেও প্রকাশকে আসামি করা হয়।