কেশবপুরে করোনাকালীন সময়ে মাধ্যমিক স্তর থেকে ঝরে গেছে ১১২৪ শিক্ষার্থী

এখন সময়: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল , ২০২৪, ০৮:৪৯:৪৭ এম

সিরাজুল ইসলাম, কেশবপুর : কেশবপুরে করোনাকালীন ১৮ মাসে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে পড়েছে ১১শ ২৪ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে বাল্যবিয়ের শিকার হয়ে ৪৪২ জন শিশু এখন শ্বশুর বাড়িতে সংসার করছে। ২৪০ জন শিশু লেখাপড়া বন্ধ করে ভ্যানগাড়ি চালাচ্ছে। অনেকে শ্রমজীবী হয়ে ইটভাটায় কাজ করে পিতা মাতার সংসারের ঘানি ঠেলছে। এর একটি অংশ মাদক সেবক হয়ে বখাটে ছেলেদের দলে ভিড়ে গেছে। তবে শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে পড়া শিশু শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

কেশবপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে কেশবপুর উপজেলায় জুনিয়র ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৭২, সমমানের মাদরাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৫২, কলেজ ১১, ফাজিল সিনিয়র মাদরাসা ৫। এসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষার্থী আছে ৩০ হাজার ৬১৯ জন।

করোনাকালীন ১৮ মাস সহ ৫৪৪ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হওয়ার পরে গত ১২ সেপ্টেম্বর দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি মাধ্যমিক স্তরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজিরা খাতা অনুযায়ী অনুপস্থিত, শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে পড়া ও বাল্যবিয়ের শিকার হওয়া শিক্ষার্থীদের তথ্যের তালিকা প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে জমা দিয়েছেন। জমা দেওয়া তালিকা অনুযায়ী  শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে পড়া শিশুর সংখ্যা মাধ্যমিক ৪২১ জন, মাদরাাসা ২৬১ জন। এছাড়াও বাল্যবিয়ের শিকার মাধ্যমিক ২৫৩ জন ও মাদরাসায় ১৮৯ জন।

কেশবপুর উপজেলার বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমার বিদ্যালয়ের ৮ম, ৯ম ও ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪০ ভাগ মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। উপ বৃত্তির টাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাকরা জেনেও তা গোপন করার চেষ্টা করছে। অনেক প্রতিষ্ঠা প্রধান নাম প্রকাশ না করে বলেন অনেক মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে তার পরেও তারা স্কুলের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিশু শিক্ষার্থী শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে পড়েছে ঠিক। অনেকে বাল্যবিয়ের শিকার হয়ে এখন শ্বশুর বাড়ি স্বামীর সংসার করছে, অনেকে শ্রমিকের কাজ করছে। এতদিন বন্ধ থাকার কারণে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওইভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। বর্তমান প্রতিষ্ঠান প্রধান ও অভিভাবকদের সাথে মতবিনিময় করে শিক্ষার্থীদের ক্লোজ মনিটরিং করা হচ্ছে। ঝরে পড়া শিশু শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।