অসীম মোদক,মহেশপুর : যেখানে ছিল ময়লার স্তুপ আর ছোট ছোট ঝোঁপঝাড়, সেখানে বসবাস করত মশা। সেই জমিতেই আজ থোকায় থোকায় ঝুলছে লাউ ঝিঙে আর শসা। সরকারি বাসভবনের সামনে পরিত্যক্ত ও পতিত জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির শাক সবজি চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা আক্তার। নিজের হাতে সবজি বাগান পরিচর্চা করে প্রশংসিত হয়েছেন। পড়ে থাকা জমিতে পরিচর্যা করে আজ কৃষি বাগানে পরিণত করেছেন তিনি। তার চাষকৃত শাক সবজি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মাঝে উপহার স্বরূপ বিতরণ করছেন।
উপজেলা পরিষদের ভেতরের পতিত জায়গায় বিষমুক্ত সবজি বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে এখন শোভা পাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন নানা শাকসবজি। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাদিজা আক্তার এ সবজি বাগান গড়ে তুলে হচ্ছেন প্রশংসিত।
ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও’)র বাসভবনের সামনেও উপজেলা পরিষদের ভেতরে পতিত জায়গাটি এখন নানা রকমের শাক-সবজিতে ভরা। যেখানে ছিল ঝোঁপঝাড় আর মশাদের আনাগোনা সেখানে আজ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে কৃষি বাগানে পরিণত হয়েছে। এখানে লউ, পুঁইশাক, কলমিশাক, লালশাক, সিম, করলা, ঢেঁড়স, টমেটো বরবটি, মরিচ, আদা, বেগুনসহ নানা ধরনের শাক সবজির চাষ করা হয়েছে। এসব সবজি চাষে ব্যবহার করা হয়নি কোন ধরনের কীটনাশক। শুধুমাত্র জৈব সার ব্যবহার করে সম্পূর্ণ বিষমুক্ত শাক সবজি উৎপাদন করা হচ্ছে।
সময় পেলে ইউএনও নিজেই সবজি বাগানের পরিচর্যা করেন। এখান থেকে নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মেটানো ছাড়াও সাধারণ মানুষের মাঝে এ শাক সবজি বিতরণ করা হয়। ইতোমধ্যে এ সবজি বাগানটি স্থানীয়দের নজর কেড়েছে। এটি দেখে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন পতিত জমিতে বিষমুক্ত সবজি চাষে।
উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা বাহারুল ইসলাম জানান, ইউএনও স্যার নিজের হাতে উৎপাদিত সবজি চাষে সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অবসর সময়ে তিনি নিজেও সবজি গাছগুলোর পরিচর্যা করেন। তিনি আরও বলেন, পড়ে থাকা পতিত জমি ময়লার স্তুপ অপসারণ করে ভালো একটি জায়গাতে পরিণত করা সেই সাথে এলাকার দুস্থ ও অসহায় মানুষদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার জন্যই করেছেন এই বাগান। তাই প্রতি সপ্তাহে একদিন শুক্রবার ৯ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত উন্মুক্ত করে দিয়েছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন সুলতানা জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও’)র উদ্যোগে উপজেলা পরিষদের পতিত জায়গায় বিষমুক্ত শাক-সবজির চাষ করা হয়েছে। কীটনাশক ছাড়াই এসব সবজি উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়েছে জৈব সার। এ কাজে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা তাকে নানাভাবে সহযোগিতা দিয়ে আসছি। তিনি আরও বলেন, যাদের পতিত জমি আছে ফেলে না রেখে তারাও সেখানে শাক-সবজির চাষ করলে কৃষি অফিস থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাদিজা আক্তার জানান- পতিত জমি, যেখানে ছিল ময়লার স্তুপ ছোট ছোট ঝোঁপঝাড় আর বসবাস করত মশা। সেই জায়গাকে পরিষ্কার করে সবজি বাগান করার উদ্যোগ নেয়া হয়। যাতে সেখান থেকে অসহায় গরিব মানুষেরা যাদের জমি নেই, শাক সবজি লাগানোর। তারা যাতে তাদের পরিবার নিয়ে টাটকা শাকসবাজি নিজ হাতে তুলে নিয়ে খেতে পারে।