নাচগানের কথা বলে যশোরে আনা হয়

পাটকেলঘাটার ধর্মান্তরিত মিতু হত্যায় মামলা, আটক মৃন্ময়ের স্বীকারোক্তি

এখন সময়: রবিবার, ৫ মে , ২০২৪, ১০:১২:১৯ পিএম

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর সদর উপজেলার চান্দুটিয়া বুকভরা বাঁওড়ের কাছে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার খাদিজা খাতুন ওরফে মিতু হত্যার ঘটনায় কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে চান্দুটিয়া গ্রামের মদন কুমার ভদ্রের ছেলে মৃন্ময় ভদ্র ওরফে নিলয়কে (৩২)। এদিকে আসামি নিলয় তার সাবেক স্ত্রী মিতুকে হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকার করেছে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া ওই জবানবন্দি ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করেছেন।

নিহতের মা পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়া (কাটাখালী)  গ্রামের নাসিমা বেগম (৬৫) এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তার মেয়ে খাদিজার ৯ বছর আগে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা এলাকার রফিকুল ইসলাম বাবু ওরফে চোর বাবু নামে একজনের সাথে বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের মরিয়ম সুলতানা (৮) নামে একটি মেয়ে আছে। রফিকুলের সাথে তালাক হয়ে যাওয়ার পর খাদিজা বিভিন্ন এলাকায় নাচগান করে জীবিকা নির্বাহ করতো। বছর তিনেক আগে থেকে আসামি নিলয়ের সাথে খাদিজার পরিচয় হয়। নিলয় প্রায় সময় তার মেয়েকে নাচগানের অনুষ্ঠানে নিয়ে যেতো। অনুষ্ঠানে খাদিজা নিজেকে মাধবী হিসাবে পরিচয় দিতো। অনেকের মুখে তিনি জানতে পারেন খাদিজা ধর্মান্তরিত হয়ে নিলয়কে বিয়ে করেছে। এই কথা শোনার পর তিনি খাদিজাকে জিজ্ঞাসা করলে খাদিজা অস্বীকার করে।

গত ২৩ এপ্রিল নিলয় তার বাড়িতে যায় এবং নাচগানের অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। রাত ৮টার দিকে খাদিজা ফোন করে জানায় যে তার বাড়ি ফিরতে দেরি হবে। পরে রাতে আবার ফোন দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন ২৪ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় ইউপি মেম্বার আনিছুর রহমানের কাছ থেকে জানতে পারেন যশোরে খাদিজার লাশ পাওয়া গেছে। সংবাদ পেয়ে তিনি যশোরে আসেন এবং যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে গিয়ে খাদিজার মরদেহ দেখতে পান। পরে জানতে পারেন চান্দুটিয়া গ্রামের বুকভরা বাঁওড়ের পাশ থেকে ডিবি পুলিশ তার মেয়ের লাশ উদ্ধার করেন। গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শাড়ি দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ বাঁওড়ের পাশে ফেলে রেখে যায়। পুলিশ নিলয়কে আটক করেছে এবং হত্যার ঘটনাটি স্বীকার করেছে বলে তিনি জানতে পারেন।

এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই খান মাইদুল ইসলাম রাজিব জানিয়েছেন, আটক নিলয়কে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হয়। সে সময় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়ার কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

এদিকে নিলয় পুলিশকে জানিয়েছে, খাদিজা ইসলাম ধর্মত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে তাকে বিয়ে করে। নাম দেন মিতু। কিন্তু বিয়ের পর থেকে নানাভাবে তার কাছ থেকে টাকা আদায় করতো। যে কারণে তিনি তাকে তালাক দেন। তালাকের পর মিতু একাধিক বিয়ে করেছে। প্রত্যেকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের একান্তে থাকা নানা ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে ব্লাকমেইলিং করতো। এতে তিনি অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন। ফলে তাকে পরিকল্পনা করে পাটকেলঘাটা থেকে যশোরে এনে হত্যা করেন।