কোটচাঁদপুরে ইউপি সদস্যকে হাতুড়িপেটা

এখন সময়: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল , ২০২৪, ০৯:১৪:১৮ এম

কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: কোটচাঁদপুর আসননগর কুল্যাগাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে এলাঙ্গী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য তাইজুল ইসলাম (৪৫) কে হাতুড়ি পেটা করা হয়েছে। তাইজুলকে ওই রাতে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

তাইজুল ইসলাম জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে দমদমা বাজারের মশিয়ারের চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। এ সময় এলাঙ্গী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান খানের নেতৃত্বে ১০/১২ মোটর সাইকেলে তার লোকজন নিয়ে বাজারে উপস্থিত হন। এ সময় তার সাথে থাকা সাজ্জাদ (৩৮), স্বপন (৩৩) সহ তাদের সহযোগীরা চায়ের দোকানে গিয়ে ভোট চাচ্ছিস কেন বলেই তাইজুলের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা তাকে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাতসহ হাতুড়ি পেটা করে। হামলার ঘটনায় তাইজুল জ্ঞান হারিয়ে ফেললে স্থানীয়রা তাকে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। রোববার দুপুর ১ টার দিকে তাকে ঝিনাইদহ জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। ওই এলাকার ১ নম্বর ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান জানান, আমাকে খুঁজতে এসে না পেয়ে তাইজুলের উপর হামলা করা হয়েছে। রোববার ছিল আসননগর কুল্যাগাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন। এ নির্বাচনে ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান ও তাইজুল ইসলামের সমর্থিত ৪ জন অভিভাবক সদস্য প্রার্থী ছিলেন। তাদের অভিযোগ নির্বাচনের আগের রাতে ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান খান পরিকল্পিতভাবে ত্রাস সৃষ্টি করেন। যাতে করে তাদের সমর্থিত প্রার্থী ও ভোটাররা নির্বাচনের মাঠে না যায়। এর আগে গত ১১ আগষ্ট মনোনয়ন কিনতে গিয়ে তাদের সমর্থিত প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ও গোলাম মোস্তফাকে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্চিত করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে এদিন দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান খান সাংবাদিকদের জানান তার বিরুদ্ধে করা সকল অভিযোগ অসত্য। রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে আসাননগর কুল্যাগাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভোট গ্রহণ করা হয়। প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন কোটচাঁদপুর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রতন মিয়া। সরেজমিনে দেখা যায় নির্বাচনে চেয়ারম্যান সমর্থিত প্রার্থী ছাড়া অন্য কোন প্রার্থী বা সমর্থক উপস্থিত ছিল না। প্রতিপক্ষের কোন ভোটার ভোট দিতে গেলেও তাদেরকে স্কুলের আঙিনা থেকেই বের করে দেয়া হয়। উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ফারুক আহম্মেদ জানান, নির্বাচনে ৫ প্রার্থীর এজেন্ট ছিল। বাকী ৪ জন প্রার্থীর উপস্থিতি দেখা যায়নি। তাদের কোন এজেন্টও ছিল না। নির্বাচনে ২৫৭ জন ভোটারের মধ্যে মাত্র ১৫৭ জন ভোটার ভোট দেন। অভিভাবক সদস্য পদে শরিফ উদ্দিন ১৩০ ভোট পেয়ে ১ম, হাফিজুর রহমান ১২৮ ভোট পেয়ে ২য়, জহুরুল ইসলাম ১২২ ভোট ৩য় ও আব্দুল গাফ্ফার ১০২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

এদিকে ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান অভিযোগ করেন, যে কোন মুহূর্তে চেয়ারম্যানের লোকজন আমার উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করতে পারে। তাই আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে দারুনভাবে শংকিত। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান খানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তাইজুলকে মারার সময় আমি ছিলাম না। আমি তাকে মারতে যাবো কেন? সে তো আমার পরিষদের সদস্য। নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাইজুল তো স্কুলের ভোটারই না। এ ব্যাপারে রোববার সকালে কোটচাঁদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।