দূর্গাপুর সেতু নির্মাণে পাল্টে যাবে কয়েক গ্রামের মানুষের জীবন যাত্রার মান

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২৪, ০৫:০৬:২০ পিএম

আব্দুল মতিন, মণিরামপুর: ‘ক্ষেতের ফসল বিক্রি করতে আর অনেক পথ ঘুরে হাটে নিতে হবে না। ক্ষেত থেকেই ফসল তুলেই সোজা হাটে নিতি পারবানে। ঘরের বারান্দা থেকে মোটরসাইকেল নামিয়ে কাজ সেরে ফের বারান্দায় উঠে পড়বো।’ কথাগুলো বলছিলেন কেশবপুর সীমন্তবর্তী মণিরামপুর উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের সুশান্ত দাস ও নারায়ন হোড়। পূরন হতে যাচ্ছে প্রতীক্ষার সেই স্বপ্নের সেতুটি।

সেতু নির্মাণে কয়েক গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মান পাল্টে যাবে, বছরের পর বছর ভোগান্তিতে থাকা গ্রামবাসির আশা। ক্ষেতের ফসল বিক্রি করতে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না। মালামাল মাথায় করে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হতে হবে না। সাঁকোর উপর দিয়ে চলার সময় পা পিছলে নদীতে পড়তে হবে না। স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হতে হবে না।

বছরের পর বছর হরিহর নদীর উপর বাঁশের নির্মিত সাঁকো দিয়েই পারাপার করে এসেছেন দূর্গাপুর গ্রামসহ কমপক্ষে ৫ গ্রামের মানুষ। বর্তমানে এ নদীর উপর সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। কয়েক মাস পরেই জনসাধারনরে চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

ওদের চোখে-মূখে আনন্দের ছাপ। ভূক্তভোগি গ্রামবাসির দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি পূরণ হতে যাওয়ায় তাদের চোখে-মূখে প্রাপ্তির হাসি ফুটে উঠেছে। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে গ্রামের নারী-পুরুষ অনেকেই বলেন, ভোট আসলেই নেতারা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিতেন। কিন্তু এবার তাদের সেই দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত স্বপ্নের সেতু নির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা ও প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য’ের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তারা। ইতোমধ্যে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য সেতু নির্মাণ কাজের অগ্রগতি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।

প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানাযায়, খুলনা বিভাগীয় অবকাঠামো প্রকল্পের আওতায় উপজেলার দূর্গাপুর-মুজগুন্নী সড়কে হরিহর নদীর উপর এ সেতু নির্মাণে প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭৩ হাজার ৮১ টাকা। ইমন এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গেলো বছরের ২৪ এপ্রিল কাজ শুরু করে।

সরেজমিন গেলে দূর্গাপুর গ্রামের তপন দাস, আনিছুর, শিক্ষক দিলীপ পালসহ অনেকেই বলেন, সেতুর অভাবে বছরের পর বছর বাপ-দাদা, ঠাকুরদাসহ তাদের প্রজন্ম ভোগান্তি  পোহাচ্ছেন। সেতু নির্মাণ হলে শুধু এ উপজেলার দূর্গাপুর, মুজগুন্নী গ্রাম নয়, পার্শ্ববর্তী কেশবপুর উপজেলার রামচন্দ্রপুর, গড়ভাঙ্গা, ইমাননগর গ্রামের মানুষ উপকৃত হবে। সেতুবন্ধন তৈরি হবে ওই উপজেলার সাথে। গ্রামের যাদের মোটরসাইকেল, ভ্যানসহ ছোট যানবাহন আছে, থাদের অধিকাংশই এসব যানবাহন নিয়ে বাড়িতে আসতে পারেন না। আসতে হলে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে আসতে হয়। ক্ষেতের ফসল হাটে নিতে হলে পরিবহন ব্যয় খরচ বেশি পড়ে। এতে করে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতো।

ঠিকাদার প্রতষ্ঠানের কর্ণধার হাজী আনিছুর রহমান বলেন, বর্ষার কারণে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় আড়াই মাস কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, আগামী জুন মাসে কাজ শেষ হলে জনসাধারনের চলাচলে সেতু উন্মুক্ত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।