কালীগঞ্জে করোনার টিকা নিতে মারপিটের শিকার ইজিবাইক চালক!

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল , ২০২৪, ১১:২৪:৫০ পিএম

জামির হোসেন, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার টিকা নিতে আসলে হাসপাতালের স্বেচ্ছাসেবকরা ইজিবাইক চালককে মারপিট করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এসময় তার ইজিবাইকটি ভাংচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইজিবাইক চালক উপজেলার বনখির্দ্দা গ্রামের বাসিন্দা হতদরিদ্র ইজিবাইকচালক জাহিদুল ইসলাম। অভিযুক্ত হাসপাতালের স্বেচ্ছাসেবক ও হাসপাতালের পাশের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার দুপুরের দিকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটে রোগীর খুব ভীড় ছিল। এমন পরিস্থিতিতে করোনা টিকা নিতে ইজিবাইক চালিয়ে জাহিদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী, শিশু সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালে প্রবেশ করার সময় হাসপাতালের স্বেচ্ছাসেবক সাইফুল ইসলামের মোটরসাইকেলে একটু ধাক্কা লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাইফুল ইজিবাইক চালক জাহিদুলকে বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় জাহিদুলের সাথে তার স্ত্রী ও শিশু সন্তান ছিল। তারাও মারধরের শিকার হন। এমনকি সাইফুল তার ইজিবাইকটিও ভাঙচুর করে। প্রত্যেক্ষদর্শিরা আরও জানান, সাইফুলের রোজগারের ইজিবাইকটি যখন ভাঙচুর করা হয়েছে। এসময় জাহিদুল ও তার স্ত্রীর কান্নায় ভেঙে পড়েন।

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা শহিদুল ইসলাম জানান, শুনেছি সাইফুলের বাড়ি হাসপাতালের পাশেই। ফলে স্থানীয় শক্তি দেখিয়ে হাসপাতাল এলাকায় প্রভাব সৃষ্টি করেন। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তবে ঝামেলা এড়াতে কেউ মুখ খোলেন না। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে জানান, হাসপাতালের লোকজন দ্বারা এমন অবস্থার শিকার হলে মানুষ যাবে কোথায়। তারা সাইফুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

ইজিবাইক চালক জাহিদুল ইসলাম জানান, ইজিবাইকটিই তার রোজগারের জন্য একমাত্র সম্বল। তা ভেঙে দেয়ায় এখন কি করে সংসার চালাবেন তা নিয়ে চিন্তিত আছেন। এ ঘটনায় তিনি বিচার চেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী শান্তনা খাতুন বলেন, ভীড়ের কারণে তার স্বামীর ইজিবাইকের সঙ্গে সামান্য ধাক্কা লেগেছে। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের মারধর করেছে। মারধরের সময়ে তাদের শিশু সন্তান ইজিবাইকে ভিতরে তার কোলে ছিল। ইজিবাইকের সামনের গ্লাস ভাংচুর করার সময় কাঁচের টুকরা তার ও সন্তানের শরীরে লাগলে কাঁদতে থাকে। সেও ভয়ে কাঁদছিল। তিনি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

হাসপাতালের স্বেচ্ছাসেবী সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার সময় তাকে ধাক্কা দেয় ইজিবাইকটি। এ সময় তার মোটরসাইকেলের একটি লুকিং গ্লাস ভেঙে যায়। মারধর ও ইজিবাইক ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যদি মরে যেতাম? তখন আপনারা কি করতেন ? আমার ক্ষতিটি নিয়েও ভাবা উচিত।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও  পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।

তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মাজাহারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। হাসপাতালের স্বেচ্ছাসেবী, অভিযুক্ত সাইফুলের বিচার চেয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগি জাহিদুল ইসলাম। তবে তিনি বলেন, অত্যন্ত ছোট একটি ঘটনায় ভাঙচুর ও মারধর করা ঠিক হয়নি।