ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ পরাজিত মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীদের

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২৪, ১২:৪১:৩৯ পিএম

ঝিকরগাছা পৌরসভা নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে পুনরায় ভোট গণনার দাবি জানিয়েছেন তিন মেয়র ও ১০ কাউন্সিলর প্রার্থী। মঙ্গলবার প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এর আগে রোববার ঝিকরগাছা পৌরসভা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ১০২০ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। কিন্তু একটি কেন্দ্র নিয়ে মামলা জটিলতার কারণে ফলাফল প্রকাশ স্থগিত রাখা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত তিন পরাজিত মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছেলিমুল হক সালাম। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, রোববার সকাল থেকে বেলা একটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ ভাল ছিল। এরপর নৌকা প্রতীকের মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামালের সন্ত্রাসী বাহিনী প্রত্যেকটা ভোট কেন্দ্রে ঢুকে প্রকাশ্যে বলছে এখন থেকে ভোট সব নৌকায় দিতে হবে এবং ইভিএম মেশিনের পাশে দাঁড়িয়ে জোর করে ভোট নিয়েছেন। সেই সময় আমার পোলিং এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, পৌর সভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বি এম হাই স্কুলে ৪টা ৫ মিনিটে আমি কেন্দ্রে ঢুকে দেখি আমার পোলিং এজেন্ট বাইরে, ওরা বলছে আমাদের বাইরে বের করে দেয়া হয়েছে। নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের সহযোগিতায় ভোট গ্রহণের শেষ হওয়ার ৩০ মিনিট পূর্বে পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়ে সকল ইভিএম মেশিনগুলো একটি কক্ষের মধ্যে নিয়ে মেশিনের কার্ডগুলোর প্রকৃত ফলাফল পরিবর্তন করেছেন। এমনকি পরাজিত প্রার্থীদের সমর্থনকারী ভোটারবৃন্দ তাদের ভোট দিলেও তাদের ভোটের ফলাফল সংযুক্ত করা হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মেয়র পদে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএম আমানুল কাদির টুল্লু, ইমতিয়াজ আহমেদ শিপন, পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী কলিম হোসেন মৃধা বাবু, নিমাই চন্দ্র ঘোষ, মতিয়ার রহমান, সাইফুল আলম সুজন, আব্দুর রাজ্জাক লিটন, শরিফুল ইসলাম, আজাদ রহমান, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী নাছিমা খাতুন, পপি বেগম ও চিত্রা রাণী কর।

এই বিষয়ে যশোর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ন কবির বলেন, উচ্চ আদালতে রিটের প্রেক্ষিতে ৪ সপ্তাহের স্থগিতাদেশ পেয়েছেন। তাই ফলাফল স্থগিত রয়েছে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। পরাজিত প্রার্থীদের অভিযোগ পেয়েছি। তবে এই বিষয়ে তিনি আর কোন মন্তব্য করতে চাননি। আর নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল বলেন, স্মরণকালে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হয়েছে ঝিকরগাছা পৌরসভায়। আইনী জটিলতার কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। ১৪টির মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রের ফলাফলে এক হাজার ২০১ ভোটে এগিয়ে আছি। একটি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা স্থগিত করেছে আদালত। ওই কেন্দ্রে এক হাজার একশ’র মত ভোট কাস্ট হয়েছে। কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন, ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৬৬ জন এবং তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৮ জনপ্রতিদ্ব›দ্বী করেন। প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এ ভোট দিয়েছেন ভোটাররা। প্রথমবার ইভিএমে ভোট দিতে পেরে খুশি তারা।