কমেছে কৃষিজমি, বেড়েছে উৎপাদন

এখন সময়: শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪, ০৯:৫৪:২৯ এম

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: বাংলাদেশের আবাদযোগ্য জমি ৬৬ শতাংশ থেকে বর্তমান সময়ে ৬০ শতাংশে নেমে আসার পরও খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম কর্মকর্তারা বলেন, দেশের উপক‚ল জুড়ে ৩৩ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন থেকে বঞ্চিত রয়েছে। ৭২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১৯টি জেলার ১ কোটি অধিবাসী এই বঞ্চনার শিকার হয়েছেন জানিয়ে তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজন এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হতে পারে। তারা আরও বলেন, কেবল আউশ, আমন ও বোরো ধান উৎপাদনই নয়, দেশজুড়ে সব ধরনের কৃষিখাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে উপক‚লের জলাবদ্ধতা হ্রাস এবং লবণাক্ততা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারলে এ উৎপাদন আরও বেড়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা পাবলিক মিলনায়তনে কৃষি ফোরাম আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোঃ হুমায়ুন কবির। এসময় ঢাকা থেকে আসা কৃষি ফোরামের সঙ্গে সংযুক্ত হন দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার ডেপুটি নিউজ এডিটর সাংবাদিক মানিক মুনতাসির, বিএজেএফ ও দৈনিক বণিক বার্তার সাহানোয়ার সাইদ শাহীন, ৭১ টেলিভিশনের কাবেরী মৈয়ত্র প্রমুখ।

তথ্যউপাত্ত তুলে ধরে কৃষি সাংবাদিক নেতারা বলেন, বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে এক ফসলি, দুই ফসলি ও তিন ফসলি চাষাবাদ করার কারনে। এমনকি জমির বহুমুখী ব্যবহারও এই উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক শক্তির কাজ করেছে। আবাদযোগ্য ৭৫ শতাংশ জমিতে এভাবে বহুমুখী এবং মিশ্র চাষ করে উপক‚লে খাদ্য উৎপাদন আরও বাড়িয়ে দেয়া সম্ভব। দেশে এখন ৪৫ লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয় উল্লেখ করে তারা বলেন, উপক‚ল অঞ্চলে সচরাচর লবণাক্ততার মাত্রা ছিল ৭ থেকে ৮ পিপিটি। বর্তমান সময়ের শুষ্ক মওসুমে তা ১৮/১৯ পিপিটি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিনাসহ বিভিন্ন জাতের ধান উৎপাদন ১২ থেকে ১৩ পিপিটি পর্যন্ত সম্ভব হলেও অন্যান্য উৎপাদন নানাভাবে মার খাচ্ছে।

উপক‚লীয় জেলা সাতক্ষীরার আশাশুনি ও শ্যামনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় এখন লবণাক্ততার কারনে পরিবেশগত বিপর্যয় শুরু হয়েছে। নদী খালে পুকুরে নোনা পানি এবং জলাবদ্ধতার অবসান শেষে বিস্তীর্ণ এলাকা বালুকাময় হয়ে ওঠায় সেখানকার সবুজ বৃক্ষ সম্পদ শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে। সাজানো গাছপালা এবং ধানসহ অন্যান্য কৃষি খাদ্যপণ্য উৎপাদন কঠিন হয়ে পড়েছে। লবণাক্ততার সাথে যুদ্ধ করে লবণ সহিষ্ণু ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। এসবের পরও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত এবং মনুষ্যসৃষ্ট জলাবদ্ধতা ও লবনাক্ততার কবল থেকে রক্ষা পেতে অভিযোজন প্রক্রিয়া জোরদার করতে হবে। এ প্রসঙ্গে তারা দেশের ৯ কোটি টন কৃষিপণ্য উৎপাদনের তথ্য তুলে ধরেন।

উন্মুক্ত আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ করেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী, সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর রহমান, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ২৪ এবং সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনি প্রমুখ সাংবাদিক।