উদ্বোধনের আগেই হেলে পড়লো মোচিকের পানি শোধনাগারের হাউজ

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২৪, ০৬:৫৮:৪২ এম

জামির হোসেন, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) : উদ্বোধনের আগেই প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ চিনিকলের পানি শোধনাগার প্রকল্পের হাউজটি হেলে পড়েছে। স্থাপনাটিতে অতি নি¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের ফলেই এমনটি হয়েছে বলে অনেকের অভিমত। তবে, হাউজটি হেলে ঝঁঁঁঁুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের সময়মত এটি পুণঃনির্মাণ করে দেবেন। তাই যে কোন মুহূর্তে হাউজটি উল্টে প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক সংলগ্ন মোচিক মিলের কারখানার পেছন দিকে এ স্থাপনাটি নির্মাণ হচ্ছে।

উল্লেখ্য, এ মিলের কারখানার বর্জ্য পানির বহুল ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তরের সুপারিশে শিল্প মন্ত্রণালয় এই পানি শোধনাগারটি নির্মাণ করছে।

জানা গেছে, সারাদেশে ১৪ টি সুগার মিলের বর্জ্য পানি শোধন করার জন্য প্রায় ৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪ টি পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের বাজেটটি একনেকে পাস হবার পরই শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন চিনিকলে কাজ শুরু করা হয়। এরই অংশ হিসাবে মোবারকগঞ্জ সুগার মিলেও বর্জ্য পানি শোধনাগারটি নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তবে বেশ কিছুদিন আগেই এটির কনস্ট্রাকশন ও মেশিনারীজের কাজ সম্পন্ন হলেও পরিক্ষামুলক চালু বা উদ্বোধন করা হয়নি। কিন্তু এরমধ্যে গত মাসে জাওয়াদের ভারী বর্ষণের পরই ওই পানি শোধনাগারের হাউজটি আকস্মিক হেলে পড়ে। সেই থেকেই হাউজটি হেলে অবস্থায় থাকাতে শ্রমিকদের জন্য তা ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে পানি শোধনাগার ওই প্রকল্পের পিডি বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন ঢাকা হেড অফিসের কর্মকর্তা শহিদুল করিম, হাউজটি হেলে পড়ার কথা স্বীকার করে জানান, তারা আরো একটি নতুন হাউজ নির্মাণ করে দিবেন। কনস্ট্রাকশন ও মেশিনারীজের কাজ প্রায় সম্পন্ন হলেও নতুন হাউজ না হওয়া পর্যন্ত প্রকল্পটি চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে হাউজটি হেলে পড়ে থাকলেও কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তিনি জানান, আগামী বছরের মধ্যে নতুন আরো একটি হাউজ নির্মাণ করার পরই হেলে পড়া হাউজটি ভেঙে ফেলা হবে। আর এ প্রকল্পে বরাদ্দ বা হাউজ হেলে পড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি তথ্য অধিদফতরের নিয়মে তার দফতরে ম্যাসেজ দিলেই পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিতে পারবেন বলে জানান।

মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকিবুর রহমান খান জানান, সদ্য নির্মিত পানি শোধনাগারের হাউজটি চালুর আগেই হেলে পড়ার ঘটনাটি দুঃখজনক। তিনি সরেজমিনে হাউজটি দেখে হেড অফিসের সংশ্লিষ্টদের অবহিত করেছেন। ওই দফতরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা তাকে জানিয়েছেন হেলে পড়া ট্যাঙ্কটি খুব শিঘ্রই পুনঃনির্মাণ করে দিবেন। তবে, কর্তৃপক্ষ পানি শোধনাগার প্রকল্পটি এখনো অত্র মিলের নিকট হস্তান্তর বা কোন কাগজপত্র দেয়নি। যে কারণে এটির নির্মাণ ব্যয় বা প্রকল্পের বিষয়ে আর কোনো তথ্যই দিতে পারছেন না বলে জানান। আর তিনি এ মিলে সদ্য এমডি হিসাবে যোগদান করেছেন। তাই বিষয়টির আরো বিস্তারিত জানতে অত্র মিলের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা বলতে বলেন।

বিষয়টি জানতে মোবারকগঞ্জ চিনিকলের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের মোবাইলে ফোন দিলে তিনি জানান, পানি শোধনাগার প্রকল্পের কাজের কোনো কাগজপত্র বা দায়িত্ব তাকে দেয়া হয়নি। তবে, শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে কাজটি করা হচ্ছে জানালেও এর বাইরে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।