Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

পাইকগাছায় ৪ লাখ মানুষের জন্য চিকিৎসক মাত্র ৪ জন!

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর , ২০২৫, ০৫:০৮:২৭ এম

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও জনবল সংকটে চিকিৎসা সেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলার প্রায় ৪ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিয়োজিত আছেন ৪ ডাক্তার। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও ৩১ শয্যার জনবল নিয়ে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের জনদুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
হাসপাতালে ২৪ চিকিৎসকের পদ থাকলেও আছে মাত্র ৭ জন। বাকি ১৭ চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। ৭ চিকিৎসকের মধ্যে অন্য হাসপাতালে সংযুক্তিতে তিনজন। বর্তমানে চার ডাক্তার দিচ্ছেন প্রায় চার লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা। হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার, জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), অর্থপেডিক, পেডিয়াট্রিক্স, ইএনটি, ওগো, সাভারি, কার্ডিওলজি, অফযালমোলজি, স্ক্রিন অ্যান্ড ভিডি, এ্যানেসথেটিস্ট, ইনডোর মেডিকেল অফিসার, ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার, মেডিকেল অফিসার, সহকারী সার্জনসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক শূন্য রয়েছে।
দক্ষিণ অঞ্চলের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকটে নিজেই এখন রোগীতে পরিণত হয়েছে। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ডাক্তার দেখাতে না পেরে বাধ্য হয়ে শহর বা ক্লিনিকমুখি হচ্ছে। প্রতিদিন আউটডোরে ৪শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। আর প্রতিদিন প্রায় ১৫০ রোগী ভর্তি থাকে। ফলে সীমিত শয্যা সংখ্যার কারণে ভর্তি হওয়া রোগীদের সেবা দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। ২০১৫ সালের ৫ মার্চ ৩১ শয্যার হাসপাতালে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও সেবার মান বাড়েনি। দেয়া হয়নি চাহিদামত জনবল। ৩১ শয্যার জনবল নিয়ে ৫০ শয্যার হাসপাতালে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে।
উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা এই হাসপাতালটি। এ ছাড়াও আশপাশের জেলা সাতক্ষীরার আশাশুনি ও তালা, খুলনার দাকোপ উপজেলা থেকেও এখানে চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন অনেক রোগী। এত বিপুলসংখ্যক জনগণের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এছাড়াও স্বাস্থ্য সহকারীর বেশিরভাগ পদ দীর্ঘদিন শূন্যসহ আল্ট্রাসনোলজিস্ট, মালী না থাকায় বাগানের পরিচর্যা করতে পারছে না। অত্র কমপ্লেক্সের যেখানে মোট কর্মকর্তা কর্মচারীর পদ রয়েছে ২৩৭, সেখানে রয়েছে, ১৪০ জন, পদ শূন্য রয়েছে ৯৭ জন। দীর্ঘদিন শূন্যপদ রয়েছে ১৫। এ ছাড়াও সার্জারি যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতা, অপরিচ্ছন্নতা, ওয়ার্ডে পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা, ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত বাথরুম, খাবারে অনিয়মসহ নান্য সমস্যায় জর্জরিত হাসপাতালটি। তেলের অভাবে ঠিকমতো চলে না জেনারেটর। স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ১০ ইউনিয়ন, একটি পৌরসভার অন্তত চার লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র সরকারি হাসপাতালটি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবর রহমান জানান, হাসপাতালে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও প্রয়োজনীয় জনবল বাড়ানো হয়নি। হাসপাতালের চিকিৎসক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির জনবল সংকট রয়েছে। অপ্রতুল সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। জরুরি ভিত্তিতে শূন্য পদের জনবল পূরণ, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হবে না।স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে অনেক পদই শূন্য রয়েছে। যে কারণে আমরা প্রয়োজনীয় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। হাসপাতালে যে পরিমান রোগীর চাপ তাতে ১০০ বেডে উন্নীত করা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আশাকরি, কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নিবেন। জনগণ তাদের যথাযথ চিকিৎসার সুবিধা সুনিশ্চিত করতে পারবে।
পাইকগাছার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি হাসপাতালের জনবল সংকট ও অব্যবস্থাপনার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান না করলে উপকূলীয় জনপদের মানুষ চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত থেকে যাবে। জরুরি ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটিতে চিকিৎসক, জনবল বৃদ্ধি, যন্ত্রপাতিসহ সরঞ্জামাদি সরবরাহ করে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)