যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে সেফুরক্সিম ও সেফট্রিঅ্যাকসন ইনজেকশনের সংকট

এখন সময়: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল , ২০২৪, ১০:৩৪:১৭ পিএম

বিল্লাল হোসেন: যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ বিনামূল্যের সেফুরক্সিম ৭৫০ এমজি ইনজেকশন নেই। এছাড়া সেফট্রিঅ্যাকসন ১ গ্রাম ইনজেকশনের তীব্র সংকট চলছে। গ্যাসের ইনজেকশনও রোগীরা ঠিকমতো পাচ্ছেন না। দামি এসব ইনজেকশন বাইরে থেকে কিনতে গিয়ে রোগীর স্বজনরা রীতিমতো হাফিয়ে উঠছেন। সরকারের বিনামূল্যের ওষুধ না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন নি¤œ আয়ের মানুষ। হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) ইনজেকশন সরবরাহ না করার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, যশোরসহ আশপাশের  কয়েকটি জেলা ও উপজেলার রোগীদের আশা ভরসার স্থল হলো যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল । সরকারি এই স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে  প্রতিদিন দ্বিগুণের বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। বহির্বিভাগে গড় চিকিৎসা সেবা নেন ৯ শ থেকে ১ হাজার রোগী। স্বনামধন্য এই হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত পাওয়ায় যশোরসহ নড়াইল, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, মাগুরা জেলার অধিকাংশ গরিব মানুষ চিকিৎসা নিতে এখানে আসেন। উদ্দেশ্য একটাই অল্প খরচে উন্নত চিকিৎসাসেবা পাওয়া। গরিব মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারিভাবে এই হাসপাতালে ৮৪ প্রকারের ওষুধ সরবরাহ কর হয়। এর মধ্যে ইডিসিএল ৪৪ প্রকার ও স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্থানীয় অর্থে টেন্ডারের মাধ্যমে অবশিষ্ট ৪০ প্রকার ওষুধ কর্তৃপক্ষ ক্রয় করে। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের সংকট চলছে। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, হাসপাতালের সার্জারি, মেডিসিন, হৃদরোগ, গাইনি, অর্থোপেডিকস, গাইনি, পেইং, লেবার  ওয়ার্ডের একাধিক রোগী স্বজনরা জানিয়েছেন, এসব ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসার জন্য অধিকাংশ ইনজেকশন বাইরে কিনে আনতে হয়। বিনামূল্যের ইনজেকশন ঠিক মতো দেয়া হয়না। বাইরে থেকে কেনার জন্য স্লিপ করে দেয়া হচ্ছে। ইনজেকশন সেফুরক্সিম ৭৫০ এমজি, সেফট্রিঅ্যাকসন ১ গ্রাম ও ওমেপ্রাজল রোগীর চিকিৎসার জন্য কিনে আনছেন স্বজনরা। একাধিক রোগীর স্বজনকে দেয়া ওষুধের স্লিপ দেখে এর সত্যতা মেলে। মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন শফিকুল ইসলাম জানান, তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু প্রতিদিন দুইটা করে সেফট্রিঅ্যাকসোন এবং ওমেপ্রাজল ইনজেকশন বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়েছে। বিনামূল্যের এসব ইনজেকশন দেয়া হয়নি।

সার্জারী ওয়ার্ড ও প্রসূতি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন কয়েক রোগীর স্বজন জানান, ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সেবিকারা বলেছেন সেফুরক্সিম ৭৫০ এমজি ইনজেকশন সাপ্লাই নেই। ফলে রোগীর চিকিৎসার জন্য বাইরে থেকে কিনে আনেন। ভুক্তবোগীরা জানিয়েছেন, জীবনদায়ী কিছু ওষুধের  তীব্র অভাব ও কিছু অতি প্রয়োজনীয় অনেক ওষুধ শূন্য হয়ে যাওয়ায় নি¤œ আয়ের মানুষ বিপাকে পড়েছেন। বাইরে থেকে দামি এসব ইনজেকশন কেনার মতো সামর্থ না থাকায় তারা হাঁফিয়ে উঠছেন।

এই বিষয়ে হাসপাতালের স্টোর কিপার সাইফুল ইসলাম জানান, দশ হাজার সেফুরক্সিম ৭৫০ এমজি ও দশ হাজার সেফট্রিঅ্যাকসন ১ গ্রাম ইনজেকশনের চাহিদাপত্র এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডে পাঠানো হয়েছিলো। কিন্তু সেফুরক্সিম ৭৫০ এমজি ইনজেকশন দেয়া হয়নি।  আর দশ হাজার সেফট্রিঅ্যাকসন ১ গ্রাম ইনজেকশন চেয়ে পাওয়া গেছে মাত্র ১ হাজার। যে কারণে কিছুটা অভাব ও সংকট দেখা দিয়েছে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান জানান, চাহিদা অনুযায়ী ইনজেকশন সরবরাহ পেতে ইডিসিএলে যোগাযোগ করা হচ্ছে। খুব শিগগির সংকট কেটে যাবে।  রোগীরা আগের মতো আবারও বিনামূল্যের ইনজেকশন এবং ওষুধ পাবেন।