খুলনার বাজারে চিনির সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২৪, ০৫:৫৪:৩৩ পিএম

খুলনা প্রতিনিধি: কেজিতে চিনির দাম ১৩ টাকা বাড়িয়েও একমাসে বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। ফলে নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছেন দোকানিরা। অন্যদিকে সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও সরকার নির্ধারিত দামে তা কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত ১৭ নভেম্বর ১০৮ টাকায় চিনির দর নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু খুলনার ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাত দেখিয়ে তা বিক্রি করছেন ১১৫/১২০ টাকায়। অপরদিকে বৃহস্পতিবার তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমিয়ে ১৮৭ টাকা ও খোলা তেল ১৬৭ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে ভোজ্যতেল সয়াবিন যথাক্রমে ১৯০ ও ১৭৫ টাকায় বিক্রি করছেন। খুলনা বড় বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ী আশা স্টোরের মালিক আসিফ জানান, দেশে উৎপাদিত চিনির সরবরাহ খুব কম। ৩০ শতাংশ চিনি আমাদের দেশে উৎপাদন হয়। মিল থেকে যা আসছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। সরবরাহের পরিমাণ কম কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশের চিনির কলের সংখ্যা ১৬। সেখানে ৮ টি মিল চালু আছে। তাছাড়া মিল মালিকরা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন। সরবরাহের পরিমাণ প্রতিদিন কমছে। তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম কম। প্রতিবেশী দেশ ভারতও চিনি রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। তাছাড়া দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিলে একদিনে বাজারে ধ্বস নামবে। দর নিয়ন্ত্রণে এলসি চালু ও বড় বড় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। বাজারের তেলের সরবরাহ আগের তুলনায় বেশ স্বাভাবিক। কিন্তু সরকার নির্ধারিত দরে কোথাও তেল পাওয়া যাচ্ছেনা। রবিবার থেকে তেলের দাম কার্যকর হওয়ার কথা জানতে চাইলে বড় বাজারের ব্যবসায়ী রেজা এন্ড ব্রাদার্সের মালিক শাহ আলম মৃধা বলেন, সরকার নির্ধারিত রেটের তেল এখনও বাজারে আসেনি। আসলে কম দাম রাখা হবে। দোলখোলা বাজারের ব্যবসায়ী মুক্তা বলেন, দাম বৃদ্ধির আগে ব্যবসায়ীরা আগাম জানান দেয়। লিটারে ৫ টাকা সরকার কমিয়েছে, কিন্তু ব্যবসায়ীরা কম নিচ্ছেন না। আমাদের বেশি দরে কিনে এ দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। অপরদিকে বাজারে চাহিদার তুলনায় ছোলা ও ডালের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় যথাক্রমে ৮৫ এবং ১০৫-১৪০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। খেজুরের সরবরাহ কম। তাই এর দাম বেশী। রোজার মাস এলে সরবরাহ বেড়ে যায়। বর্তমানে সরবরাহ কম থাকায় প্রতিকেজি খেজুর ৬০০ থেকে ১৪০০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীর। বড় বাজারের ব্যবসায়ী জাহিদুল বলেন, সরবরাহ কম থাকায় খেজুরের দাম বেশি। আমদানি বেশি হলে খেজুরের দাম কমে যাবে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে টাকা থেকে ডলারের দাম বেশি হওয়ায় খেজুরের দাম বেড়েছে। পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে এখন ৫০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। একই বাজারের মসলা ব্যবসায়ী শেখ তানভীর হোসেন বলেন, করোনাপূর্ব সময়ে মসলার দাম কম ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এর দাম ব্যাপক বাড়ে। গত ৬ মাস ধরে মসলার বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে তা মানভেদে প্রতিকেজি এলাচ ১১০০-২৪০০ টাকা, লবঙ্গ সাড়ে ১২০০ টাকা ও গোল মরিচ ৬০০ টাকায় বিক্রি করছেন।