মহেশপুরে অধিকাংশ সৌর সড়ক বাতি নষ্ট !

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২৪, ১০:০০:১০ এম

অসীম মোদক, মহেশপুর: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন সড়কে কিংবা রাস্তার মোড়ে মোড়ে কোটি টাকা খরচ করে স্থাপন করা হয় সৌর সড়ক বাতি। সেই সোলার প্যানেল ৮০ শতাংশ এখন নষ্ট ও অকেজো হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, মহেশপুরের কোথাও কোথাও সোলার আছে বাতি নেই, অনেক স্থানে ল্যাম্পপোস্ট ভেঙে পড়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার নিয়মতান্ত্রিকভাবে এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কার বা দেখভালের কথা থাকলেও ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করার কারণে আজ এগুলো নষ্ট হচ্ছে। নি¤œমানের সৌর প্যালেনসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ সংযোজন করে বেশির ভাগ অর্থ সোলার কোম্পানি হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

আজ সৌর বাতিগুলো না জ¦লার কারণে অন্ধকারে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামীণ জনপদের সাধারণ মানুষকে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানাগেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরসহ কয়েকটি অর্থ বছরে বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্টিক সোলার ও হোম সোলার স্থাপন করেন। এ উপজেলায় আনুমানিক ৫০০ স্টিক সোলার ও হোম সোলার স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ল্যাম্পপোস্টের বরাদ্দ ধরা হয়েছে আনুমানিক ৫৬ হাজার টাকা।

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান রাস্তা, মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ ও প্রতিষ্ঠানের সামনে পথচারীদের সুবিধার্থে ২৫, ৩০ ও ৫০ ওয়ার্ডের এ স্টিক সোলারগুলো বসানো হয়।

মহেশপুর উপজেলার ১২ ইউনিয়ন ও পৌরসভায় এসব সোলার লাইটগুলো দেখভালের দায়িত্ব কার এমন প্রশ্ন স্থানীয় সাধারণ মানুষের। নিয়মতান্ত্রিকভাবে এই সোলার লাইট স্থাপন ও দেখভালের দায়িত্ব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার। কিন্তু মহেশপুর উপজেলায় এসব লাইট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লাগিয়ে যাওয়ার পর আর সংস্কার করা হয়নি। উপজেলার ১২ ইউনিয়নসহ পৌরসভায় মসজিদ, মন্দির, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাস্তাঘাট, হাট-বাজার ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে সোলার সিস্টেম প্যানেল ল্যাম্পপোস্ট বসানো হয়। এদিকে সড়ক বাতিগুলো না জ¦লায় সরকারের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারের কোটি কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ১২ ইউনিয়ন এবং একটি পৌর এলাকার জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ  স্থানে বসানো ল্যাম্পপোস্টের লাইটগুলোর অধিকাংশ নষ্ট হয়ে পড়েছে।  সৌরবাতির খুঁটিগুলো দাঁড়িয়ে আছে। এতে বাতি আছে আলো নেই।

স্বরুপপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, তার ইউনিয়নের সোলার প্যালেনে গুরুত্বপূর্ণ ল্যাম্পপোস্টগুলোর অধিকাংশ বন্ধ হয়ে আছে। লাগানোর কিছুদিন পর থেকে আর লাইটগুলো জ্বলছে না। সরকারের এত টাকার সড়কবাতি  ব্যবহারে কোনো সুফল আসছে না।

এসবিকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়রম্যান আরিফান হাসান চৌধুরী নুথান জানান, আমার ইউনিয়নের কয়েকটি বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সোলার লাইট বসানো আছে। কিন্তু তার অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে, এখন আর জ্বলে না শুধু খুঁটিগুলো দাঁড়িয়ে আছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেরুন নেছা বলেন, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে সোলার লাইট গুলো হয়তো নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইউপি চেয়ারম্যানরা তাদের ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে সোলার লাইটগুলো লাগিয়েছে এটা আমাদের দেখার বিষয় না।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক আজা জানান, কম দামের সোলার প্যানেল বসালে তো নষ্ট হবেই। দাম দিয়ে কিনলেতো নষ্ট হতো না। আজ শুধু পৌর এলাকা না মহেশপুরের অধিকাংশ সোলার প্যানেল গুলো আজ নষ্ট হয়ে পড়ে পড়েছে। কে দেখবে বা কে মেরামত করবে আমরা তার কিছুই বলতে পারছিনা।