৪৪ বছর পর নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় নড়াইল ও গোপালগঞ্জবাসীর মিলনমেলা

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল , ২০২৪, ০৯:৫৭:২২ এম

ফরহাদ খান, নড়াইল : ৪৪ বছর পর অনুষ্ঠিত নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় পাশাপাশি দুই জেলা নড়াইল ও  গোপালগঞ্জবাসীর মিলনমেলায় পরিণত হয়।  জেলা দুটির মাঝ দিয়ে প্রবাহিত প্রমত্তা মধুমতি নদীর ইতনা এলাকায় এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা হয়। রোববার  বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঐহিত্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে দুই জেলার হাজারো মানুষ নদীপাড়ে ভিড় করেন। ট্রলার ও নৌকায় চেপে দূরদূরান্তের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষও উপভোগ করেন এ প্রতিযোগিতা।

নৌকাবাইচ উপলক্ষে নদীপাড়ে বসেছিল মেলাও। হরেক রকম দোকানসহ বিভিন্ন প্রকার মিষ্টির বেচাকেনা জমে উঠে মেলা জুড়ে। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভিড় করেন এখানে। 

আয়োজকরা জানান, সুবিশাল প্রমত্তা মধুমতি নদীর একপ্রান্তে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়ন। অন্যপ্রান্তে গোপালগঞ্জের রাতইল ইউনিয়নের চরভাটপাড়াসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম। দুই জেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত এই মধুমতি নদীতেই ৪৪ বছর পর অনুষ্ঠিত হলো এই নৌকাবাইচ।

স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জানায়, দীর্ঘ বছর পর এমন আয়োজনে খুশি তারা। তথ্য-প্রযুক্তির যুগে অপসংস্কৃতি রুখতে নৌকাবাইচের পাশাপাশি সব ধরণের গ্রামীণ খেলাধুলা চর্চা বাড়াতে হবে। তাহলে তরুণ ও যুবসমাজ মাদকসহ বিভিন্ন অপকর্ম থেকে দূরে থাকবে। তাছাড়া ফেসবুক, ইউটিউব, মোবাইল গেমস, আকাশসংস্কৃতিসহ নানা ধরণের অপচর্চা কমে আসবে।  ইতনা এলাকার বকুল মুন্সী বলেন, ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এখানে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলেও উদ্যোক্তার অভাবে দীর্ঘ ৪৪ বছর এ ধরণের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এবার ইতনা এলাকার বিশিষ্টজন ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেনের পৃষ্ঠপোষকতায় ঐহিত্যবাহী নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখন থেকে প্রতিবছর আমরা নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আশা করছি।

ইতনা নৌকাবাইচ উদ্যাপন কমিটির উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন বলেন, নড়াইল ও গোপালগঞ্জ জেলার সীমান্তে আমরা মিলনমেলার আয়োজন করেছি। দুই জেলার মানুষ ব্যাপক আনন্দ-উৎসব করেছেন। এখন থেকে প্রতিবছর নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে চাই। জনগণকে নির্মল আনন্দ দিতে চাই। 

প্রতিযোগিতায় মাগুরা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও মাদারীপুর জেলার পাঁচটি নৌকা অংশগ্রহণ করে। প্রায় দুই কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার কালু ফকিরের নৌকা, দ্বিতীয় হয়েছে মাগুরার কালিশংকরপুরের কবির হোসেনের নৌকা এবং তৃতীয় হয়েছে মাদারীপুরের বাহের আলীর নৌকা। প্রথম বিজয়ী নৌকাকে ফ্রিজ, দ্বিতীয় পুরস্কার ৩২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন এবং তৃতীয় বিজয়ীকে ২৪ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন পুরস্কার দেয়া হয়েছে।  

নৌকাবাইচ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-ইতনা ইউনিয়ন বিট পুলিশ কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমানসহ আরো অনেকে।