শীত ঘিরে লেপ তোষকের দোকানে ক্রেতার আকাল

এখন সময়: মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল , ২০২৪, ০৯:৫৯:১২ পিএম

মিরাজুল কবীর টিটো: ঋতু পরিক্রমায় পৌষ ও মাঘ মাস মিলিয়ে শীতকাল। তবে হেমন্তেও হালকা শীতের আমেজ পাওয়া যায়। এরই মধ্যে হেমন্তের কার্তিক মাসের অর্ধেকেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। কিন্তু তাপমাত্রার পারদ এখনো সেভাবে নিচে নামেনি। তাই ফ্যান ও এসির ব্যবহার চলছে। ফলে যশোরের লেপ-তোষকের দোকানে সেভাবে ভিড় জমেনি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, অল্পকিছুদিনের মধ্যে শীতকাল চলে আসবে। তারপরও লেপ তৈরির জন্য খদ্দের তেমন একটা আসছেন না। তাই কারিগরদের সেরকম ব্যস্ততা নেই। তাছাড়া লেপ তৈরির উপকরণের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি শীত নিবারণের বিকল্প হিসেবে অনেকে এখন কম্বল ব্যবহার করেন। যার কারণে লেপের সেই চাহিদাও আগের মত নেই। যশোর শহরের লেপ-তোষকের বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

শহরের সিভিল কোর্ট মোড়ের মন্টু বেডিং হাউজের সত্ত্বাধিকারী আবু রায়হানের সাথে আলাপচারিতায় জানান, প্রতিবছর আশি^ন-কার্তিক মাসে কিছুটা শীত পড়ে। কিন্তু এবার অথচ কার্তিক মাস শেষ হতে চললেও একটুও শীতের দেখা নেই। সেই সাথে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়াটাও অন্যতম কারণ। কার্পাস তুলার কেজি ছিল ২৫০ টাকা। দাম বেড়ে এখন হয়েছে ৩৫০ টাকা। গামের্ন্টসের তুলার দাম কেজিতে ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১৫০ টাকা হয়েছে। লেপ ও লেপের কাভার তৈরির কাপড়ের গজ ৬০ টাকা। সব মিলিয়ে বতর্মানে একটি লেপ তৈরি করতে ২ হাজার ৭০০ টাকা খরচ হচ্ছে। আগে লেপ বানাতে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা খরচ হতো। একদিকে শীত নেই। অন্যদিকে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় লেপ তৈরির কাজ কমে গেছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে লেপের বিকল্প কম্বল ও ফাইবার দিয়ে তৈরি হচ্ছে ‘কমফোর্ট’। এসব কারণে মানুষ বেশি টাকা খরচ করে লৈপ না বানিয়ে এগুলো কিনে ব্যবহার করছেন।  আগে যেখানে ৬০ থেকে ৭০ পিস লেপ তৈরি করতাম। এখন সেখানে ৮ টা থেকে ১০ টা লেপ বানানো হচ্ছে।

একই কথা বলেন, বকুলতলা সড়কের মুন বেডিং হাউজের মোস্তাক আহমেদ। তিনি জানান, অনেকে নতুন করে লেপ বানাচ্ছেন না। পুরাতন লেপ ব্যবহার করছেন। কাপড় ও তুলার দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকই নতুন লেপ না বানিয়ে পুরাতন লেপ রোদে দিয়ে শীতের জন্য প্রস্তুত রাখছেন।

সিদ্দিক বস্ত্রালয়ের মালিক খোকা জানান.  নিত্য প্রয়োজনীয়  দ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় নি¤œ আয়ের মানুষের খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকাটা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তারা লেপ তৈরির কথা ভাবতে পারছেন  না। তাদের একটাই ভাবনা দুমুঠো খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকা। শীত নিবারণের জন্য তারা লেপ বানাতে আসছেন না।