কালিগঞ্জে প্রভাব খাটিয়ে রেকর্ডীয় জমিতে ঘেরা বেড়া কেটে দেয়ার অভিযোগ

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২৪, ০৮:০০:৪৮ পিএম

কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি : কালিগঞ্জে অবৈধ প্রক্রিয়ায় প্রভাব খাটিয়ে হিমাদ্রী সরকার নামে এক ব্যক্তির রেকর্ডীয় জমির ঘেরাবেড়া কেটে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। কালিগঞ্জের তারালী ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক উপস্থিত থেকে এই ঘেরাবেড়া কেটে দেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার তারালী ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামে। সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও তারালী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ছোট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আর এর পিছনে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব ভূপালী সরকারের ইন্ধন রয়েছে বলে জানা গেছে।
উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের মৃত বলাই চন্দ্র সরকারের ছেলে ভুক্তভোগী জমি মালিক হিমাদ্রী সরকার জানান, তেঁতুলিয়া মৌজার এসএ ১৭৪ এবং আরএস ৪৫১ ও সিএস ১০০ নং খতিয়ানের ৩৫৩ ও ৩৫৪ দাগে অর্পিত ২৪ শতকসহ ১৬৫৭ নং খতিয়ানের ৩৫৩ দাগে ৩৯ শতক জমিসহ মোট ৬৩ শতক জমিতে শতাধিক বছরের উপরে বংশানুক্রমে তিনি বসবাস করে আসছেন। এর মধ্যে ২৪ শতক জমি ৬৭৭২৩/২০২১-২২ সালে নামজারি কেসে ১/১ খতিয়ান হতে, আরএস ৩৫৩ দাগের ৫ শতক এবং ৩৫৪দাগ ১৯ শতক মোট ২২২৬ খতিয়ানে মোট ২৪ শতক জমি রেকর্ড হয়। ৩৫৩ দাগ হতে বাকি ৩৯ শতক জমি ১৬৫৭ নং আরএস খতিয়ানে রেকর্ড পেয়ে তিনি ভোগ দখল করে আসছেন।
তিনি জানান, পার্শ্ববর্তী মন্দিরে যাওয়ার জন্য লিখিতভাবে আগে থেকেই সার্বজনীন একটি পথ দেয়া আছে। কিন্তু মন্দিরে যাওয়ার নাম ভাঙিয়ে ও তাকে হেনস্তা করতে তেঁতুলিয়া গ্রামের বিষ্ণুপদ সরকারের ছেলে সহাদেব সরকারকে ব্যবহার করে তার জমির উপর দিয়ে মন্দিরের যাওয়ার জন্য পথ দাবি করে ইচ্ছাকৃত ভাবে বিরোধ সৃষ্টি করা হয়। একপর্যায়ে তেঁতুলিয়া গ্রামের নিমাই সরকারের মেয়ে বর্তমান খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে কর্মরত ভুপালী সরকার দুর্গাপূজার ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসে মন্দিরে যাওয়ার রাস্তা বের করে দেয়ার জন্য কালিগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোকনুজ্জামানকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি হিমাদ্রি সরকারের নামজারীর বিরুদ্ধে সহাদেব সরকারকে দিয়ে ১৫০ ধারায় একটি আবেদন করিয়েছেন।
হিমাদ্রী সরকার আরও জানান, কোন অভিযোগ ছাড়াই তাকে অফিসে ডেকে নিয়ে রাস্তা ছেড়ে দেয়ার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়। পরবর্তীতে গত মঙ্গলবার তারালী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থলে যেয়ে ঘেরাবেড়া ভেঙে দিয়ে আসেন।
তারালী ইউপি’র সাবেক সদস্য বাবলুসহ তেঁতুলিয়া গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, হিমাদ্রী তার রেকর্ডিয় জমিতে বাপ-দাদার আমল হতে বসবাস করে আসছেন। তার জমির উপর দিয়ে কোন মন্দিরের পথ ছিল না। মন্দিরের জন্য আলাদা পথ সার্বজনীনভাবে রাখা আছে। হিমাদ্রী সরকার আমাদের গ্রামের নিমাই সরকার এর প্রতিপক্ষ হওয়ায় তার মেয়ে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ভুপালি সরকারকে দিয়ে প্রভাব খাটাচ্ছেন। সে কারণে হিমাদ্রী সরকার রেকর্ডিয় জমি রক্ষা নিয়ে শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন বলে জানান তারা।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যেটা করেছি এসিল্যান্ড স্যারের নির্দেশে করেছি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোকনুজ্জামান জানান, ১৫০ ধারা মোতাবেক একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়েছিল। ঘেরাবেড়া ভাঙা বা অন্যান্য ঘটনা সঠিক নয় বলে জানান তিনি।
ঘটনার সত্যতা জানার জন্য খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব ভূপালী সরকারের ব্যবহৃত ০১৭৩৫ ৮৭ ৪৪ ৪৫ নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।