প্রক্টরের বাসার চুরি: ইবিতে নিরাপত্তা শঙ্কা

এখন সময়: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল , ২০২৪, ০৪:৪২:৪৫ এম

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) যমুনা নামের আবাসিক ভবনের নিচতলায় গ্রিল কেটে চুরির ঘটনা ঘটেছে। ওই কক্ষে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতত্ত্ব ও ইসলাম শিক্ষা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এইচ.এন.এম এরশাদ উল্লাহ। একই ভবনের চতুর্থ তলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম এবং দ্বিতীয় তলায় প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম সেলিম থাকেন বলে জানা গেছে।

 এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি চলাকালীন মাইকিং করে ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের দাবি কড়া কঠোর নিরাপত্তায় শিক্ষার্থীদেরও ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এর আগেও বন্ধ ক্যাম্পাসে অসংখ্যবার চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোর ধরা পড়লেও বিভিন্ন কারণ ও তদবিরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তাদের অধিকাংশই কিশোর ও মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের পর আবাসিক এলাকার বাসায় (যমুনা ভবন) তালা দিয়ে সপরিবারে চলে যান। এরপর আনুমানিক ৩ জুলাই ভবনের পিছনের ব্যালকনি দিয়ে গ্রিল কেটে ভেন্টিলেটর ভেঙে চোর ভিতরে ঢুকে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চুরির বিষয় জানতে পেরে ওই শিক্ষকের স্ত্রী বুধবার ক্যাম্পাসে আসেন। তিনি আনুমানিক ২০ হাজার টাকা ও ৩ ভরি স্বর্ণ ও কয়েকটি স্টিলের ট্যাপ চুরির বিষয় নিশ্চিত করেছেন। তবে এত পরিমাণ আরো বেশি হতে পারে বলে ধারণা করছে ওই শিক্ষক।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও টিউশনি ও চাকরির প্রস্তুতির জন্য কিছু শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের পাশেই মেসে অবস্থান করছে। মাইকিং করে ক্যাম্পাসে বহিরাগত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদেরও ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেয়া হচ্ছে। আগে হলগুলোতে চুরি হতো। এখন দেখছি প্রক্টর, নিরাপত্তা কর্মকর্তার বাসার নিচতলা থেকে চুরি হচ্ছে। তাহলে কেমন নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে? নাকি সবকিছু ফাঁকা বুলি?

ভুক্তভোগী ড. এরশাদ উল্লাহ জানান, আমি গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় বিষয়টি জেনেছি। আজকে (বুধবার) আমার স্ত্রী বাসায় গেছে দেখতে। আমরা তো ভাড়া দিয়ে থাকি। এ রকম ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর ক্যাম্পাসে ফিরে মামলা দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

দায়িত্বরত প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরে নিরাপত্তা ঢেলে সাজানোর পরও এমন ঘটনা দুঃখজনক। হয়তো কোনো জায়গায় ঘাটতি রয়েছে তা খুঁজে বের করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

এদিকে গত ৩ জুলাই ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে দুইজনকে চোর সন্দেহে আটক করা হয়। পরে তাদের ইবি থানায় সোপর্দ করা হলে থানা কর্তৃপক্ষ চোরের নামে মামলা দেয়ার আগে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি উপস্থিত হয়। পরে সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম (দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রক্টর) তাদের বয়স কম হওয়ায় মামলা না দেয়ার কথা বলেন। পরে তাদের মুচলেকা নিয়ে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানা গেছে। ছাড়া পেয়ে তারাই এই চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম সেলিম বলেন, কবেনাগাদ চুরির ঘটনা ঘটেছে তা জানা যায়নি। গত ৩ জুলাাই আটককৃত দুইজন চোরকে আর চুরি না করার শর্তে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বাররা ছাড়িয়ে নেন। সেদিন রাতে এদের মাধ্যমে এই চুরির ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আটককৃতদের নামে মামলা হওয়ার কথা ছিল। পরে প্রক্টরিয়াল বড়ির চারজন এসে মুচলেকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।