শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের দিয়ে মাথার উঁকুন বাছেন প্রধান শিক্ষিকা !

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২৪, ০৪:০৪:৪৯ এম

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: দায়িত্বে অবহেলার এক নজির স্থাপন করেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ফুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আনোয়ারা ইয়াসমিন। তিনি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের দিয়ে তার মাথায় উঁকুন বাছাই ও কপাল টেপানো ছাড়াও হাত পাখার বাতাস করিয়ে নেন বলে অভিযোগ উঠছে। শিক্ষার মানউন্নয়নে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তার এমন স্বভাবের কারণে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্ষক্রম এখন নাজুক অবস্থায়।

১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত উপজেলার ফুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৪ জন শিক্ষক রয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়টি পরিচালনায় প্রধান শিক্ষিকা আনোয়ারা ইয়াসমিন কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না। তিনি বিদ্যালয়টিকে যেন তার নিজের বাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন। শ্রেণিকক্ষে বেঞ্চের উপর শুয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের দিয়ে উকুন তোলা ও মাথা কপাল টিপিয়ে নেন। এছাড়াও তার আরাম আয়েশের জন্য মাঝে মধ্যে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে হাত পাখার বাতাস করান। তার এমন কাজে কোনো শিক্ষার্থী অপারগতা দেখালে মানসিক নির্যাতন চালিয়ে থাকেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষা বহির্ভূত এহেন কর্মকাণ্ড ছাড়াও মাাঝে মাঝে স্কুল চলাকালিন সময়ে প্রধান শিক্ষিকা তার স্কুল এরিয়ার মধ্যে গাছের ছায়ায় পাটি পেড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘুমিয়ে থাকেন। এ ছাড়াও অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষিকা নিয়মিত স্কুলে আসেন না। কমিটিকে ম্যানেজ করে ব্যাকডেটেও উপস্থিতির স্বাক্ষর করে থাকেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার এমন অনিয়মের বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিভাবকরা জানায়, সন্তানদের স্কুলে পাঠাই লেখাপড়া করানোর জন্য। কিন্তু প্রধান শিক্ষিকার এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সন্তানরা স্কুলে যাওয়ার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। আর একজন প্রধান শিক্ষিকা হয়েও প্রকাশ্যে গাছের নিচে পাটি পেতে ঘুমিয়ে থাকা ও ছাত্রদের দিয়ে উঁকুন বাছানোর কাজটি অত্যন্ত লজ্জাজনক।

এসব বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আনোয়ারা ইয়াসমিন জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক নহে। কেউ ইর্ষান্বিত হয়ে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে।

ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফয়সাল আহম্মেদ বেল্টু জানান, তিনি চলতি মাসেই নতুন কমিটির সভাপতি অন্তভূক্ত হয়েছেন। তবে, এখনো বিদ্যালয়ে কোনো মিটিং করতে পারেনি। আর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কর্তৃক ছাত্রদের সাথে নানা অবহেলার বিষয়টি তিনিও অবগত হয়েছেন। সোমবার বিদ্যালয়ে গিয়ে ঘটনার বিষয়ে মিটিং করে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সেলিনা আক্তার বানু বলেন, একজন শিক্ষিকার এমন কর্মকাণ্ড মোটেও সমুচিত নয়। তিনি বিষয়টি শোনার পর রোববার তার অফিসের এক কর্মকর্তাকে ওই বিদ্যালয়ে পাঠিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান তিনি।