আজগর হোসেন ছাব্বির দাকোপ: খুলনার দাকোপে উপজেলা প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারের বিরুদ্ধেমসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের টাকা তুলে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। এ গত শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে মুসুল্লিরা মসজিদ চত্বরে দুর্নীতি বিরোধী প্লাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মানববন্ধন করে। এ সময় বক্তব্য রাখেন মসজিদ কমিটির সভাপতি মোখলেছুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম শেখ, মাইনুদ্দিন খান, লালু পাটোয়ারী, আবেদ খান, সোহেল পাটোয়ারী, রুবেল মোল্যা, জালাল উদ্দিন, কামাল হোসেন, মোঃ আলামিনসহ আরো অনেকে।
বক্তারা জানান, দাকোপের বানীশান্তা বাজার এলাকায় পশুর নদী ভাঙনে সুন্দরবন জামে মসজিদ নদীগর্ভে বিলিন হয়। ২০২০ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি স্থানান্তরিত জায়গায় নতুন মসজিদ ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করে সরকার। সার্বজনীন সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়ন (জি এস আইডি) প্রকল্পের আওতায় ১৮ লাখ ৫৮ হাজার ৫৬৪ টাকা ব্যয়ে শুরু হওয়া কাজটি একই বছরের ২৫ জুন শেষ হওয়ার কথা। উপজেলা এলজিইডি দপ্তর কাজটির নির্মাণ কাজ তদারকির দায়িত্বে ছিল। মেসার্স মাষ্টার এন্টার প্রাইজ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি কাজ না করে বানীশান্তার ইউপি সদস্য এনায়েত শরীফকে সাব কন্টাকে দিয়ে দেয়। প্রকল্পের মেয়াদকাল শেষ হওয়ার পর প্রায় দু’ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত নির্মাণ কাজ অসমাপ্ত। কাজের দায়িত্ব নেওয়া ঠিকাদারকে অসংখ্যবার তাগাদা দিলেও তিনি কাজটি করছেন না । এ ছাড়া যে টুকু সমাপ্ত হয়েছে সেখানেও আছে অনিয়মের অভিযোগ। নির্মাণ কাজ শেষ না হলেও উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর ঠিকাদারকে চুড়ান্ত বিল পরিশোধ এমনকি জামানাতের টাকা পর্যন্ত দিয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্পের বরাদ্দের বাইরে কাজের মান উন্নত করার জন্য ঠিকাদার এনায়েত শরীফ মসজিদ কমিটির কাছ থেকে নগত ২ লাখ টাকা নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সাব কন্টাক্টর এনায়েত শরীফ কিছু কাজ অসমাপ্ত আছে স্বীকার বলেন, কমিটি আমাকে অতিরিক্ত কাজের জন্য ৯৫ হাজার টাকা দিয়েছে। তিনি বলেন মূল ঠিকাদার রফিকুল ইসলামের প্রতিষ্ঠানের নামে চেক হওয়ায় তিনি সব টাকা নিয়েছেন। এখন তিনি টাকা দিলে আমি অসমাপ্ত কাজ করে দেবো।
মেসার্স মাষ্টার এন্টার প্রাইজের প্রোপাইটার রফিকুল ইসলাম এ ঘটনার জন্য এনায়েত শরীফ এবং উপজেলা প্রকৌশলীকে দায়ী করে বলেছেন, কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় কিভাবে চূড়ান্ত বিল ও জামানাতের টাকা দেয়া হলো ! চেকের বিপরীতে লভ্যাংশসহ সব টাকা এনায়েত শরীফকে পরিশোধ করা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী ননী গোপাল দাস বলেছেন কাজ অসমাপ্ত আছে এ বিষয়টি তার জানা ছিল না। তবে অচিরেই অবশিষ্ট কাজ করে দেওয়া হবে। ছাদ ঘেকে পানি পড়া এবং রড বের হয়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেছেন কাজের মধ্যে জল ছাদ ধরা আছে কিনা সেটা আমার দেখতে হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় চুড়ান্ত বিল এবং জামানাতের অর্থ পায়না, তবে এখানে প্রকল্পের মেয়াদ কম থাকায় এটা মানবিক কুল হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন।