বিসিএলের সেরা মিঠুন-জাকির

এখন সময়: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল , ২০২৪, ১১:৩৩:১৭ এম

ক্রীড়া ডেস্ক : ওপেনিংয়ে উঠে এসে দুর্দান্ত একটি টুর্নামেন্ট কাটানো মোহাম্মদ মিঠুন নাকি পাঁচ ইনিংসে তিন সেঞ্চুরি করা জাকির হাসান, কে এগিয়ে? একজনকে বেছে নেওয়া যায়নি, তাই যৌথভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) নবম আসরে সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জিতেছেন এই দুই জন।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের এই টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান এসেছে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল দলের মিঠুনের ব?্যাট থেকে। সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন একই দলের বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ। এই দুই জন পেয়েছেন এক লাখ টাকা করে। টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার এক লাখ টাকা, পাবেন মিঠুন ও জাকির।
ফাইনালে জোড়া সেঞ্চুরি করে মধ?্যাঞ্চলের শিরোপো জয়ে বড় ভূমিকা রাখা শুভাগত হোম চৌধুরি জিতেছেন ফাইনালে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। তিনি পেয়েছেন ৩০ হাজার টাকা অর্থ পুরস্কার।
টুর্নামেন্ট জুড়ে ভালো খেলায় বিশেষ পুরস্কার পেয়েছেন রানার্সআপ বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয়। শতাধিক প্রথম শ্রেণির ম্যাচে আম্পায়ারিংয়ের জন্য বিশেষ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে মাহফুজুর রহমান লিটুকে। বিসিএলের ফাইনাল ছিল এই সংস্করণে তার ১১৯ ম্যাচ।
শিরোপাজয়ী মধ্যাঞ্চল পেয়েছে ২০ লাখ টাকা। ফাইনালে ৪ উইকেটে হেরে যাওয়া দক্ষিণাঞ্চলের প্রাপ্তি ১০ লাখ টাকা।
ওপেনিংয়ে নেমে মিঠুনের চমক
জাতীয় ক্রিকেট লিগে খুলনার হয়ে একটি ম্যাচে বল হাতে ইনিংসে ৭ উইকেট নিয়ে চমক দেখালেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন মিঠুন। ৯ ইনিংস খেলে তার রান ছিল মোটে ১৫৮, সর্বোচ্চ ৪৬।
বিসিএলে তিনিই সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ৪ ম্যাচে সাত ইনিংসে দুই সেঞ্চুরি ও এক ফিফটিতে ৬৬.৮৫ গড়ে করেছেন ৪৬৮ রান। 
এবারই প্রথম লাল বলের ক্রিকেটে ওপেন করেন মিঠুন। পরিকল্পনা করে খেলেননি অবশ্য। প্রথম ম্যাচের আগে মধ্যাঞ্চলের নিয়মিত ওপেনার আব্দুল মজিদ কোভিড সংক্রান্ত জটিলতায় ছিটকে গেলে মিঠুন নামেন ওপেন করতে। বাজিমাত করে ফেলেন তাতেই। বিসিবি উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে খেলেন ১৭৬ রানের ইনিংস, মিজানুর রহমানের সঙ্গে গড়েন বিসিএলে প্রথম তিনশ রানের উদ্বোধনী জুটি।
শুরুর মতো শেষটাও করলেন দারুণ। ফাইনালে ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিতে করেন ২০৬ রান।
মিঠুন ছাড়া চারশ রান করতে পেরেছেন কেবল শুভাগত। মধ্যাঞ্চল অধিনায়ক তিন সেঞ্চুরিতে ১০০ গড়ে করেন ৪০০ রান।
সু সময়ে জাকির
জাতীয় লিগ বাজে কাটছিল জাকিরেরও। প্রথম ১০ ইনিংসে এক ফিফটিতে করেন কেবল ২৪৭ রান। শেষ ম্যাচে একমাত্র ইনিংসে ১২২ রান করে ছন্দে ফেরার আভাস দেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। পরে দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে বিসিএল কাটালেন দারুণ। করেন তিন সেঞ্চুরি- ১৫৮, ১০৯ ও অপরাজিত ১০৭ রান। ৫ ইনিংসে ৯৯ গড়ে তার রান ৩৯৬। 
টুর্নামেন্ট জুড়ে ভালো ব্যাটিংয়ের জন্য বিশেষ পুরস্কার পাওয়া হৃদয় ৬ ইনিংসে দুই সেঞ্চুরি ও এক ফিফটিতে ৭৯.৪০ গড়ে করেন ৩৯৭ রান। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন তিনিই। চট্টগ্রামের দুই ম্যাচেই করেন সেঞ্চুরি, ২১৭ রানের পর খেলেন ১২২ রানের ইনিংস।
মুরাদের স্বপ্নের এক মৌসুম
৩৩ উইকেট নিয়ে মুরাদ ছিলেন জাতীয় লিগের সফলতম বোলার। বিসিএলেও তরুণ এই বাঁহাতি স্পিনার ছাড়িয়ে গেলেন সবাইকে। একমাত্র বোলার হিসেবে চলতি মৌসুমে লাল বলে নিলেন পঞ্চাশের বেশি উইকেট।
বিসিএলে ৪ ম্যাচে ১৯.৪৫ গড় ও ৪৬ স্ট্রাইক রেটে তার উইকেট ২২টি। ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেন দুবার। এই আসরেই নেওয়া ৭৪ রানে ৬ উইকেট তার ইনিংস সেরা বোলিং।
সব মিলিয়ে ১২ ম্যাচের ছোট্ট ক্যারিয়ারে ২০ বছর বয়সী মুরাদের উইকেট ৬৪টি, পাঁচ উইকেট নিয়েছেন পাঁচবার, চার উইকেট তিনবার।
টুর্নামেন্টে ভালো বোলিংয়ের জন্য বিশেষ পুরস্কার পাওয়া নাসুম ৪ ম্যাচে নেন ১৮ উইকেট। তিনিই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক। টি-টোয়েন্ট দলের বাঁহাতি এই স্পিনারের ইনিংস সেরা ১২৬ রানে ৬ উইকেট।