তৃতীয়ধাপে স্বতঃস্ফূর্ত ভোট

এখন সময়: শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪, ০৩:০৩:১৫ পিএম

স্পন্দন ডেস্ক : রোববার অনুষ্ঠিত হলো তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্ত ভোট প্রদান করেছেন। কেন্দ্রে কেন্দ্র ছিল ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। বিশেষ করে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। বিভিন্ন মহলের সহিংসতার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে ভোট হয়েছে শান্তিপূর্ণ। নির্বাচন কমিশনও এ ভোটকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মডেল বলে উল্লেখ করেছেন। 
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার রোববার (২৮ নভেম্বর) ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশন ভবনে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এমনটি দাবি করেন। সচিবের মতে, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া এবারের ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণ হয়েছে এবং ভোটাররাও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট প্রদান করতে পেরেছেন।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, এক হাজারটি ইউপি এবং ৯টি পৌরসভায় ভোট গ্রহণের কথা থাকলেও চট্টগ্রাম জেলার ১৪টি ইউপিতে বিনা প্রতিদ্ধন্দ্বিতা সব চেয়ারম্যান মেম্বার নির্বাচিত হওয়ায় সেখানে ভোট গ্রহণের প্রয়োজন হয়নি। বাকি ৯৮৬টি ভোটকেন্দ্রে প্রাথমিক হিসেবে ৭০ শতাংশের বেশি ভোট কাস্ট হয়েছে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্র প্রিসাইডিং অফিসারদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ২১টি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে বলেও জানানো হয়। ছোটখাটো কয়েকটি এদিকে যশোরের ৩৫টি ইউপিতে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। রোববার জেলার শার্শা, বাঘারপাড়া এবং মণিরামপুর উপজেলার এসব ইউপিতে সকাল ৯টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। যা চলে বিকাল ৪টায় পর্যন্ত।
ডিহি ইউনিয়নের নতুন ভোটার নয়ন হোসেন প্রথমবারের মত ভোট দিয়েছেন। ভোট দিয়ে অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এই প্রথম ভোট দিলাম। খুব ভালো লাগছে ভোট দিয়ে। প্রথম ভোটটা একজন সৎ যোগ্য লোককে দিয়েছি।’ অনেকটা একই ধরণের অনুভূতি ব্যক্ত করেন এই ইউনিয়নের হযরত, শরিফ, জয়নাল।
শার্শা উপজেলার ডিহি ইউনিয়নের কাশিপুর কেন্দ্রর দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনী কর্মকর্তা কলিম উল্লাহ জানান, সকাল থেকে কোনো সহিংসতা ছাড়া ব্যাপক ভোটার উপস্থিতির মধ্য দিয়ে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এ কেন্দ্রে পঞ্চান্ন শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। 
একই ইউপির রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার বাবলু বিশ্বাস জানান, তার কেন্দ্রে সকাল থেকে ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট প্রদান করেছেন। এই কেন্দ্রে সত্তর শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
জেলায় যে ৩৫টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে সেগুলো মধ্যে শার্শা উপজেলায় রয়েছে দশটি ইউনিয়ন। ইউনিয়ন গুলো হচ্ছে-ডিহি, লক্ষণপুর, নিজামপুর, পুটখালী, কায়বা, গোগা, বাগআঁচড়া, শার্শা সদর, নাভারণ এবং বাহাদুরপুর।
মণিরামপুর উপজেলায় রয়েছে ১৬টি। ইউনিয়নগুলো হচ্ছে-শ্যামকুড়, কাশিমনগর, রোহিতা, খেদাপাড়া, ঝাঁপা, চালুয়াহাটি, ভোজগাতি, ঢাকুরিয়া, হরিদাসকাটি, মণিরামপুর সদর, মশ্মিমনগর, খানপুর, নেহালপুর, দুর্বাডাঙ্গা, কুলটিয়া ও মনোহরপুর।
অন্যদিকে, বাঘারপাড়ার ইউনিয়নগুলো হলো, জহুরপুর, বন্দবিলা, রায়পুর, বাসুয়াড়ি, জামদিয়া, দোহাকোলা, নারিকেলবাড়ীয়া, ধলগ্রাম ও দরাজহাট। এর মধ্যে উপজেলার রায়পুরে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে।
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি জানান, ব্যাপক উৎসব আমেজের মধ্যে দিয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। রোববার সকাল থেকেই প্রতিটি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্রেই ছিল মহিলা ভোটারদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। সেই সাথেই ছিল প্রশাসনের নজিরবিহীন নিরাপত্তা বেষ্টনী। এবারে নির্বাচনের ফলাফলে আওয়ামী লীগের থেকে-৮ জন, আ’লীগ বিদ্্েরাহী-২ জন ও  স্বতন্ত্র থেকে-১ জন (হিজড়া সম্প্রদায়ের) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। 
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, বেসরকারী ফলাফলে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ীরা হলেন-১ নং সুন্দপুর দূর্গাপূর ইউনিয়নে ওহিদুজ্জামান ওদু (আ’লীগ নৌকা) (বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ), ২ নং জামাল ইউনিয়নে মোদাচ্ছের হোসেন (আ’লীগ নৌকা), ৩ নং কোলা ইউনিয়নে আলাউদ্দিন আল আজাদ (আ.লীগ বিদ্রোহী) (আনারস প্রতীক),  ৪ নং নিয়ামতপুর ইউনিয়নে রাজু আহম্মেদ রনি লস্কর (আ’লীগ নৌকা), ৫ নং সিমলা রোকনপুর ইউনিয়নে নাছির চৌধুরী (আ’লীগ নৌকা), ৬ নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে হিজড়া সম্প্রদায়ের নজরুল ইসলাম রিতু (স্বতন্ত্র আনারস প্রতীক), ৭ নং রায়গ্রাম ইউনিয়নে আলী হোসেন অপু (আ’লীগ নৌকা) (বিনাপ্রতিদ্বন্দিতায়), ৮ নং মালিয়াট ইউনিয়নে আজিজুল খাঁ (আ’লীগ বিদ্রোহী আনারস প্রতিক), ৯ নং বারবাজার ইউনিয়নে আবুল কালাম আজাদ (আ’লীগ নৌকা) (বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায়), ১০ নং কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নে আয়ুব হোসেন খান (আ’লীগ নৌকা) ও ১১ নং রাখালগাছী ইউনিয়নে মহিবুল ইসলাম মন্টু (আ’লীগ নৌকা)।
মাগুরা প্রতিনিধি জানান, মাগুরা শালিখা ও মহম্মদপুর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে উৎসবমুখর পরিবেশে রবিবার  ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে । সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টি পযন্ত  এ ভোট গ্রহণ চলে। শালিখা ৪২টি কেন্দ্রে ৩৮৩টি বুথে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৩০ জন এবং মহম্মদপুর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ৯২টি কেন্দ্রে ৪৫৬টি বুথে ১লাখ ৬৫ হাজার ৯০৮ জন ভোটার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দুটি উপজেলার ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. অলিউল ইসলাম জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার সদস্য  দায়িত্বশীলতারসাথে কাজ করেছেন। ভোট  সুষ্ঠু পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে বিজিবি ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের টহল জোরদার ছিল। অন্যদিকে, শালিখা উপজেলার কুশবাড়িয়া কেন্দ্র এলাকায় দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ সারোয়ার ও কামরুল নামের দুইজনকে আটক করে। তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে বলে শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারকনাথ বিশ্বাস জানান।
কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি জানান, কালিগঞ্জের ১২ ইউনিয়নে উৎসবমূখর পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৫ টিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়া একটিতে জাতীয় পার্টি, একটিতে বিএনপি’র স্বতন্ত্র প্রার্থী, দু’টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী, তিনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
বেসরকারি ভাবে পাওয়া ফলাফলে বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন, ১নং কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য প্রয়াত ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেনের মেয়ে সাফিয়া পারভীন (লাঙ্গল), ২নং বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে বিএনপি’র উপজেলা ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম (আনারস), ৩নং চাম্পাফুল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক গাইন (নৌকা), ৪নং দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোবিন্দ মন্ডল (নৌকা), ৫নং কুশুলিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল কাশেম মোহাম্মদ আব্দুল্যাহ (নৌকা), ৬নং নলতা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান (চশমা), ৭নং তারালী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ছোট (নৌকা), ৮নং ভাড়াশিমলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম নাঈম (আনারস), ৯নং মথুরেশপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাকিম (রজনীগন্ধা), ১০নং ধলবাড়িয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান গাজী শওকাত হোসেন (ঘোড়া), ১১ নং রতনপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলিম আল রাজি টোকন (নৌকা) এবং ১২নং মৌতলা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস মোড়ল (ঘোড়া) প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘারপাড়া  জানান,  ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে বাঘারপাড়ার নয়টি ইউনিয়নের ভোট সম্পন্ন হয়েছে। 
জোহুরপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫৭৯৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীকের নতুন মুখ আসাদুজ্জামান মিন্টু। নিকটতম হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বদর উদ্দীন মোল্ল্যা। তিনি মোটর সাইকেল প্রতীকে ৩২৭৯ ভোট পেয়েছেন। এ ইউনিয়নে সকাল শেষ পর্যন্ত নৌকার বিপক্ষের ভোটারদের মাঠে আসতে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। 
বন্দবিলা ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি মনোনীত সব্দুল হোসেন খান। তিনি হাতুড়ি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৬০৪৬ ভোট। নিকটতম হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান তপন। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪০৭৬ ভোট। 
রায়পুর ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মঞ্জুর রশিদ স্বপন। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৭৪৩৬ ভোট। নিকটতম হয়েছেন বিল্লাল হোসেন । তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩৬৮৭ ভোট।
নারেিকল বাড়িয়া ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের বাবলু সাহা বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ৯৬২১। নিকটতম হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আবু তাহের আবুল সর্দার। তিনি আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৭৩৮ ভোট। নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটাদের মাঠে আসতে না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ধলগ্রাম ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে রবিউল ইসলাম রবি বিজয়ী হয়েছে। তিনি পেয়েছেন ১১০০২ ভোট। তার নিকটতম হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিয়ার রহমান সরদার। তিনি আনারস প্রতীকে ১৫২ ভোট পেয়েছেন।
দোহাকুলা ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আবু মোতালেব তরফদার। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১০৫৯৩ ভোট। তার নিকটতম হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অরুণ অধিকারি। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৬৪০ ভোট।
দরাজহাট ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন। তার প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ৪৯০০। এ ইউনিয়নে নিকটতম হয়েছেন আনারস প্রতীকের মোহাম্মাদ আলী । তিনি পেয়েছেন ৩৬৭৩ ভোট।
বাসুয়াড়ি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে আমিনুর সরদার বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ৬২২৩। নিকটতম হয়েছেন ঘোড়া প্রতীকের হাফিজুর রহমান। তার প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ২৭৭০ । এ ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্রে নৌকা সমর্থকরা আধিপাত্য বিস্তার করে বিপক্ষের ভোটারদের মাঠে আসতে দেয়নি। আবার কোন কোন কেন্দ্রে নেীকার এজেন্টদেও সামনে সীল মারতে হয়েছে। এমন অভিযোগ অনেকেরই।
জামদিয়ায় নৌকা প্রতীকের আরিফুল ইসলাম তিব্বত  বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৮০০৯ ভোট। কিটতম হয়েছেন আনারস প্রতীকের আসলাম হোসেন। তিনি পেয়েছেন ৪৮৯৮ ভোট।
যশোরের শার্শা উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনে নৌকা ৫টি স্বতন্ত্র ৫টিতে বিজয়ী হয়েছেন। দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে ভোট দিতে দেখা যায় পুরুষ ও মহিলা ভোটারদের। ১০টি ইউনিয়ানের ১২৮টি ভোট কেন্দ্রে ২২৭টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ১০টি ইউনিয়ানে চেয়ারম্যান পদে ৪৩ জন, মেম্বার পদে ৪০৭ জন এবং মহিলা মেম্বার পদে ৯৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বদ্বিতা করেছেন। এ ১০টি ইউনিয়নে ২লাখ ৭৮ হাজার ৬৪৯ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১লাখ ৩৯ হাজার ৩২৩ জন এবং মহিলা ভোটার ১লাখ ৩৯ হাজার ৩২৬ জন।
যারা পাশ করেছেন, ১নং ডিহি আসাদুজ্জামান মুকুল (নৌকা), ২নং লক্ষণপুর আনোয়ারা বেগম (নৌকা), ৩নং বাহাদুরপুরে মফিজুর রহমান (স্বতন্ত্র), ৫নং পুটখালী আব্দুল গফ্ফার সরদার (নৌকা), ৬নং গোগা তবিবুর রহমান তবি (স্বতন্ত্র), ৭নং কায়বা আলতাফ হোসেন (স্বতন্ত্র), ৮নং বাগআঁচড়া আব্দুল খালেক (স্বতন্ত্র), ৯নং উলাশী রফিকুল ইসলাম (নৌকা), ১০নং শার্শা কবির উদ্দিন আহম্মদ তোতা (নৌকা), ১১নং নিজামপুর সেলিম রেজা বিপুল হোসেন (স্বতন্ত্র)। 
আব্দুল মতিন, মণিরামপুর থেকে জানান, মণিরামপুরের ১৬ ইউনিয়নে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীন ভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ৯ জন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ৫ জন এবং ২ জন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে দায়িত্ব থাকা সূত্র থেকে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিতরা হচ্ছেন রোহিতা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হাফিজ উদ্দীন, কাশিমনগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তৌহিদুর রহমান, ভোজগাতী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (মোটরসাইকেল) প্রতীকের আব্দুর রাজ্জাক, ঢাকুরিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (আনারস) প্রতীকের আইয়ুব হোসেন গাজী, হরিদাসকাটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (আনারস) প্রতীকের আলমগীর হোসেন লিটন, মণিরামপুর সদর ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী (চশমা) প্রতীকের নিস্তার ফারুক, খেদাপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল আলিম জিন্নাহ, ঝাঁপা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শামছুল হক মন্টু, মশ্বিমনগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল হোসেন, চালুয়াহাটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (চশমা) প্রতীকের আব্দুল হামিদ সরদার, শ্যামকুড় ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলমগীর হোসেন, খানপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (ঘোড়া) প্রতীকের সিরাজুল ইসলাম, দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাযহারুল আনোয়ার, কুলটিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখর চন্দ্র রায়, নেহালপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হুসাইন ফারুক হোসেন এবং মনোহরপুর ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী (চশমা) প্রতীকের আকতার ফারুক মিন্টু বে-সরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন বলে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন। 
কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি : কোনো প্রকার অপ্রতিকর ঘটনা ছাড়াই কোটচাঁদপুরের ৫টি ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ভোট শুরুর আগে সকাল থেকে নারী ও পুরুষরা লম্বা লাইনে দাড়িয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাব, ৪ শতাধিক পুলিশ, ৮’শ ৭৬ জন আনসার ভিডিপি, ৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দু’জন জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করেন। ৫টি ইউনিয়নের ৫১টি কেন্দ্রের ২’শ ৭৬টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হয়। মোট ভোটার ছিল ৮৭,১৮৪ জন। নির্বাচনে ১নং সাবদারপুর ইউনিয়ন থেকে বেসরকারিভাবে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আব্দুল মান্নান আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান নৌকা প্রতীকের নওশের আলী নাছির, ২নং দোড়া ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল জলিল বিশ্বাস আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন অপর বিদ্রোহী প্রার্থী শামিম আরা হ্যাপি। এখানে নৌকা প্রতীক পাওয়া বর্তমান চেয়ারমান কাবিল উদ্দীন বিশ্বাস প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আসতে পারেননি। ৩নং কুশনা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহারুজ্জামান সবুজ চশমা প্রতীক নিয়ে জয় লাভ করেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিরুল ইসলাম। এই ইউনিয়নেও আওয়ামীলীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আসতে পারেন নি। ৪ নং বলুহর ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী নজরুল ইসলাম নজু আনারস প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন। ৫ নং এলাঙ্গী ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী মিজানুর রহমান খান ৬২৭১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিদ্রোহী প্রার্থী চশমা প্রতীকের আজিজুর রহমান মানিক। তিনি পেয়েছেন ৪৩৯৩ ভোট। কোটচাঁদপুর উপজেলা রিটার্নিং অফিসার ওয়াহিদ মুরাদ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (১০.১৫) প্রার্থীদের ভোটের প্রাপ্ত সংখ্যা ও আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত হওয়ার ঘোষণা দিতে পারেননি।