জাতীয় লিগে ৭ বছর পর চ্যাম্পিয়ন ঢাকা

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ , ২০২৪, ১১:০০:৪০ পিএম

ক্রীড়া প্রতিবেদক : শিরোপা ঘরে তুলতে জয়ের বিকল্প ছিল না। শেষ দিনে প্রতিপক্ষের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন-আপ গুটিয়ে দেওয়াও ছিল না সহজ কাজ। কঠিন সেই চ্যালেঞ্জে তাইবুর রহমানের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে উতরে গেল ঢাকা বিভাগ। গতবারের চ্যাম্পিয়ন খুলনা বিভাগকে হারিয়ে সাত বছর পর জাতীয় লিগের শিরোপা জিতল তারা। বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে প্রথম স্তরের ম্যাচে বুধবার খুলনাকে ১৭৯ রান হারিয়েছে ঢাকা। ৩৭৯ রানের লক্ষ্য দিয়ে প্রতিপক্ষকে তারা গুটিয়ে দিয়েছে ১৯৯ রানে। ঢাকার এটি ষষ্ঠ শিরোপা। এর আগে ২০১৩-১৪ মৌসুমে সবশেষ শিরোপার স্বাদ পেয়েছিল দলটি। জাতীয় লিগের রেকর্ড সাতবারের চ্যাম্পিয়ন খুলনার হলো বাজে অভিজ্ঞতা। ম্যাচটি হেরে তারা প্রথম স্তর থেকে নেমে গেল দ্বিতীয় স্তরে। ঢাকার জয়ের নায়ক তাইবুরের মূল কাজ ব্যাটিং হলেও বল হাতেও বেশ কার্যকর তিনি। দলকে জিতিয়ে তারই প্রমাণ দিলেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৪০ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন ঢাকার অধিনায়ক। তার আগের সেরা ৩১ রান দিয়ে চার উইকেট। অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে ম্যাচের সেরা অবশ্য শুভাগত হোম। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে ৪৮ রান দিয়ে ৭ উইকেট নেন তিনি। এই ইনিংসে নিলেন তিনটি। পাশাপাশি ব্যাট হাতে দুই ইনিংস রান করেন ২১ ও ৩৩। শেষ দিনে খুলনার প্রয়োজন ছিল ৩৭২ রান, ঢাকার ১০ উইকেট। বিনা উইকেট ৭ রান নিয়ে খেলতে নামা খুলনা শিবিরে দিনের তৃতীয় ওভারেই আঘাত হানে ঢাকা। পেসার সুমন খানের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান অভিজ্ঞ ইমরুল কায়েস। অমিত মজুমদার ও রবিউল ইসলাম শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন; কিন্তু ৩০ রানেই শেষ তাদের জুটি। এরপর টানা তিন ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় খুলনা। অমিতকে বোল্ড করে শিকার ধরা শুরু করেন তাইবুর। নিজের পরের ওভারে রবিউলকেও ফিরিয়ে দেন তিনি। মাঝে সৌম্য সরকারকে শূন্য রানের তেতো স্বাদ দেন শুভাগত। ৪৮ রানে চার উইকেট হারানো দলের হাল ধরতে পারেননি মোহাম্মদ মিঠুনও। বল হাতে ৭ উইকেট নিয়ে চমক দেখানো এই ক্রিকেটার শুভাগতকে ছক্কায় উড়িয়ে রানের খাতা খোলেন। পরে এলবিডব্লিউ হয়ে যান তাইবুরের বলে। এই স্পিনারের পরের ওভারে আউট জিয়াউর রহমান। ৩ চার ও এক ছক্কায় ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪০ রান করা নাহিদুল ইসলামকে বোল্ড করেন শুভাগত। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো দলটির হয়ে একমাত্র পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি গড়েন ইমরানুজ্জামান ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি। ৫ চারে ৩২ রান করা ইমরানুজ্জামানকে ফিরিয়ে ৬১ রানের জুটি ভাঙেন নাজমুল ইসলাম অপু। পরের ওভারেই মৃত্যুঞ্জয়কে সাজঘরে ফেরত পাঠান শুভাগত। তাইবুরের বলে আল আমিন হোসেন স্টাম্পড হলে শেষ হয়ে যায় খুলনার লড়াই। সঙ্গে ইনিংসে নিজের প্রথম পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন তাইবুর। সংক্ষিপ্ত স্কোর: ঢাকা ১ম ইনিংস: ৩৩৫। খুলনা ১ম ইনিংস: ৫৭.৪ ওভারে ২১৩ (আগের দিন ১৮০/৮) (মৃত্যুঞ্জয় ২৬, টিপু ১৮*, আল আমিন ৩; সুমন ১২-৩-৫২-৩, সালাউদ্দিন ৫-০-২৭-০, এনামুল ৮-২-৩০-০, শুভাগত ১৮.৪-৫-৪৮-৭, নাজমুল ১৪-১-৪৮-০)। ঢাকা ২য় ইনিংস: ৬৭.৫ ওভারে ২৫৬/৮ ডিক্লে. (মজিদ ৬১, রনি ৮৭, মাহিদুল ০, রকিবুল ১৬, তাইবুর ৩৭, শুভাগত ৩৩, নাদিফ ১১, সুমন ৬, নাজমুল ৩*; আল আমিন ৪-১-১৭-০, সৌম্য ৭-১-২৩-০, মৃত্যুঞ্জয় ২.১-০-১৪-০, টিপু ২৬-৪-৭৭-১, নাহিদুল ১.৫-০-১৩-০, রবি ৬-০-৩৬-০, মিঠুন ২০.৫-২-৭৫-৭)। খুলনা ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৭৯) (আগের দিন ৭/০) ৯৮.১ ওভারে ১৯৯ (ইমরুল ৩, অমিত ২০, রবিউল ১৯, সৌম্য ০, মিঠুন ১৪, নাহিদুল ৪০, জিয়াউর ০, ইমরানুজ্জামান ৩২, মৃত্যুঞ্জয় ২৯, টিপু ৮*, আল আমিন ১৯; শুভাগত ৩৮-১০-৬৬-৩, নাজমুল ২৯-১০-৫৬-১, সুমন ৮-১-১৭-১, এনামুল ৬-০-৮-০, তাইবুর ১৭.১-৯-৪০-৫)। ফল: ঢাকা বিভাগ ১৭৯ রানে জয়ী। ম্যান অব দা ম্যাচ: শুভাগত হোম।