সন্তান প্রসবের ২০ ঘণ্টা পর এসএসসি পরীক্ষা দিলো জাকিয়া

এখন সময়: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল , ২০২৪, ০৮:৪৩:৫২ এম

মাগুরা প্রতিনিধি : সন্তান প্রসবের ২০ ঘণ্টা পর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় জাকিয়া সুলতানা। মঙ্গলবার  বেলা দুইটায় মহম্মদপুর সরকারি আর.এস.কে.এইচ ইনস্টিটিউশন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৮ নং কক্ষে ব্যবসায় উদ্যেগ পরীক্ষায় অংশ নেয়। জাকিয়া  উপজেলার হরেকৃষ্ণপুর এমএফএ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সে হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের লাভলু মিয়ার  মেয়ে। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় জেলার শ্রীপুর  উপজেলার মদনপুরের গ্রামের মো. এরশাদ মোল্যার  সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে থেকেই সে লেখাপড়া চালিয়ে যায়। 
সোমবার দুপুর ১২টায় ইমার প্রসববেদনা শুরু হলে ওই দিন সন্ধ্যা ছয়টায় বাড়িতে স্বাভাবিকভাবে কন্যাসন্তানের মা হয় জাকিয়া।  বাড়ি থেকে বেলা দেড়টায় ব্যাটারি চালিত একটি অটোরিকশায় করে জাকিয়াকে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে যান তার বাবা লাভলু মিয়া। শিক্ষকেরা জানান, সে দেড় ঘণ্টার পরীক্ষা শেষ করেছে। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে সে। হরেকৃষ্ণপুর এমএফএ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম  জানান, মেয়েটি ভালো ছাত্রী। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার বিয়ে হয়। তবে অন্য মেয়েদের মতোই সে নিয়মিত ক্লাস করেছে। বাল্যবিবাহ ও সন্তান প্রসব-এসব বাধা তাকে দমাতে পারেনি।
প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম আরও জানান, সদ্য সন্তান প্রসবের কারণে ইমার পরিবার থেকে তাকে পরীক্ষা না দেওয়ার জন্য বলা হলেও সে কারও কথা শোনেনি। বরং পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। সে উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছে। সে পড়ালেখা শেষ করে শিক্ষক হতে চায়।
সরকারি আর.এস.কে.এইচ ইনস্টিটিউশন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিব এ.কে.এম নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘পরীক্ষা চলার সময় আমি ছাত্রীটির সার্বক্ষণিক খোঁজ নিয়েছি। সে খুব সাহসের সঙ্গে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ আনোয়ার হোসেন বলেন, বাল্যবিবাহের কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি কঠোরভাবে তা মোকাবিলা করি। বিদ্যালয়ে গিয়ে বাল্যবিবাহ না করার জন্য শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করি।